কাঁচা মরিচ ৫০০!
বরিশালে কাঁচা মরিচ পাইকারি বাজারে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। দু-তিনদিন ধরে কাঁচা মরিচের এমন মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা। এছাড়া অন্য সবজি গত সপ্তাহ থেকে একই দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
তবে খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের এমন মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কিছুই জানেন না বরিশাল নগরীর একমাত্র পাইকারি কাঁচামালের বাজার বরিশাল বহুমুখী সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
বহুমুখী সিটি মার্কেটের দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিন শুভ জাগো নিউজকে জানান, তারা দুদিন ধরেই কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় পাইকারি বিক্রি করছেন। এর আগে গত সপ্তাহে ২০০ থেকে আড়াইশো টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
শুভ আরও জানান, পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচ ছাড়া সব সবজির দাম এক সপ্তাহ ধরে একই রয়েছে। গত সপ্তাহে শসা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। করোলা গত সপ্তাহে কেজি ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এছাড়া চিচিঙ্গা গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও ২০ টাকা, পটোল ১৫ টাকা, পেঁপে এ সপ্তাহেও ২০-৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস আকারভেদে ৩০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৫০ ও মিষ্টি কুমড়া এ সপ্তাহেও ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব সবজি খুচরা বাজারে দেড়গুণ বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার এলাকার খুচরা সবজি বিক্রেতা নূর আলম জাগো নিউজকে বলেন, দুই-তিন দিন ধরে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। দুদিন আগেও পাইকারি ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় কিনেছি। এখন সেই কাঁচা মরিচ কিনতে হচ্ছে সাড়ে তিনশো টাকায়। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা করে। এছাড়া অন্য সবজি পটোল ২০ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, লাউ ৪০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, করোলা ৭০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর বাংলাবাজারে বাজার করতে আসা শাহিন বলেন, গত কয়েকদিন আগে কাঁচা মরিচ কিনেছি ৩০০ টাকায়। এখন সেই কাঁচা মরিচ কিনছি ৪৮০ টাকা করে। দাম বাড়লেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস না কিনেতো আর উপায় নেই। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি প্রয়োজন।
আরেক ক্রেতা মনির বলেন, পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি কাঁচা মরিচ ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ সেই কাঁচা মরিচ বাজার ভেদে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছে।
পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে তিনগুণ বেশি দামে মরিচ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাবাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পাইকারি মোকাম থেকে সবজি কেনার পর পরিবহন ব্যয় ও শ্রমিক মজুরি দিয়ে আনতে হয়। তারপর বাজারে সবজি নিয়ে বসলে সেজন্য ভাড়া দিতে হয়। লাইটের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে গেলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়। তাই খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি দরের তুলনা করে লাভ নেই।
তবে আগামীকালের মধ্যে মরিচের দাম কমবে বলে জানান বহুমুখী সিটি মার্কেটের দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিন শুভ।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী জাগো নিউজকে বলেন, কেউ অযথা মূল্যবৃদ্ধি করলে তার বিরুদ্ধে জরিমানা করাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে বাজার তদারকিমূলক অভিযান নিয়মিত অব্যাহত রয়েছে।
শাওন খান/এফএ/এএসএম