গড়ে সাড়ে ৪ হাজার মোটরসাইকেল পার, ২ মাসে আয় ২ কোটি ৯৩ লাখ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: ১১:০৮ এএম, ২৫ জুন ২০২৩

দুই মাসের বেশি সময় ধরে পদ্মা সেতু দিয়ে শর্তসাপেক্ষে মোটরসাইকেল পারাপার হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন পার হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজারের অধিক দুই চাকার এই যান। ফলে মানুষের যাতায়াত সহজ তো হয়েছেই, বাড়ছে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ।

যান চলাচলে বিশৃঙ্খলা এড়াতে বন্ধ হলেও বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা আর চালকদের সচেতনতায় পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে। নিয়ম মেনেই অধিকাংশ চালক সেতু পার হচ্ছেন। এতে একদিকে এসব যানে সহজেই যাতায়াত করতে পারছেন তারা, অন্যদিকে আদায়কৃত টোলে বাড়ছে রাজস্ব আয়।

আরও পড়ুন> সাতক্ষীরা থেকে ঢাকা এখন ৫ ঘণ্টার দূরত্ব

সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্তের পর গত ২০ এপ্রিল থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত সেতু পার হয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার ২৮২টি মোটরসাইকেল। আর এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৯৩ লাখ ২৮ হাজার ২০০ টাকা।

jagonews24

সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা সেতুর উত্তর থানা মোড় থেকে মোটসাইকেল চলার সড়ক হয়ে নির্ধারিত ডেডিকেটেড লেন দিয়ে সেতুতে উঠছে মোটরসাইকেল। গত ২০ এপ্রিল মোটরসাইকেল চলার জন্য সেতু খুলে দেওয়ার পর সেতু আলাদা করে লেন করা হয়েছিল রশি দিয়ে। বর্তমানে রশি দিয়ে পৃথক লেন না থাকলেও নির্ধারিত স্থানের পাশ দিয়ে সেতু পার হচ্ছে এই যান। পদ্মা সেতুর উত্তর থানার মোড় থেকেই চালকদের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ।

স্বপ্নের সেতু হয়ে সহজে ফিরতে পারায় খুশি মোটরসাইকেল আরোহীরা।

আরও পড়ুন> জীবনে গতি ফিরিয়েছে পদ্মা সেতু

ঢাকা থেকে শরীয়তপুরগামী মোটরসাইকেল আরোহী আহতাব হোসেন বলেন, ঢাকায় বড় ভাইয়ের ব্যবসার সঙ্গে সহযোগী হিসাবে কাজ করি। বিভিন্ন প্রয়োজনেই সপ্তাহে দু-একবার বাড়িতে যেতে হয়। সেতু দিয়ে সহজেই যখন তখন যেতে পারি। আমরা চেষ্টা করি নিয়ম মেনেই নির্ধারিত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। সবাই সবাইকে উৎসাহ দেই নিয়ম মানার জন্য। যেন আর কখনও সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ না হয়।

একই কথা জানান, আরেক আরোহী মো. শিমুল। তিনি বলেন, মোটরসাইকেল চলতে দেওয়ায় এখন নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াত করি। ছোট-খাটো প্রয়োজনেও যাতায়াত করি, কারণ এখন ভোগান্তি নেই। আর মোটরসাইকেল চালানো সাশ্রয়ী, যাতায়াতও সহজ হয়েছে।

jagonews24

শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক পুলিশের ব্যাপক তৎপরতাও চোখে পড়ে। পদ্মা সেতুতে শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক পুলিশ কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এতে সেতুতে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হচ্ছে। নির্ধারিত লেন ও গতি মেনে চলতে নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কাজ করছে তারা। সেতুতে স্পিডগান দিয়ে গতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে, বর্তমানে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ চালক পুরোপুরি নিয়ম মেনে চলছেন।

আরও পড়ুন> বদলেছে কুয়াকাটার চিত্র, পর্যটক দ্বিগুণ

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ বজলুর রহমান জানান, শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের সার্বক্ষণিক তৎপরতা থাকছে। বিশৃঙ্খলার প্রবণতা কমে এসেছে।এরপরও আমাদের অভিযান চলছে। গত ২১ এপ্রিল থেকে ২২ জুন পর্যন্ত দুই মাসে নিয়ম অমান্য করায় ২৬৫ জন মোটরসাইকেল চালককে জরিমানা করা হয়েছে। নির্ধারিত লেন অতিক্রম ও অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোই তাদের জরিমানা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতে চালকদের আরও সতর্ক হতে হবে এবং নিয়ম মানতে হবে।

বিশৃঙ্খলার কারণে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর পরদিনই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল মোটরসাইকেলে পারাপার। ১০ মাস বন্ধ থাকার পর শর্তসাপেক্ষে মোটরসাইকেলে পারাপারের জন্য খুলে দেওয়া হয় সেতুর দ্বার।

এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।