প্রতিমন্ত্রীর সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধরের অভিযোগ
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় সাখাওয়াত হোসেন সবুজ নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৩ জুন) সকালে রৌমারী উপজেলা পরিষদ হল রুমে প্রতিমন্ত্রীর সামনে ওই নেতাকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলা পরিষদ হল রুমে চলছিল আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়, এ কারণে তিনি বক্তব্য দেবেন না বলে জানান।
পরবর্তী সময়ে ওই সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজকে ইঙ্গিত করে বলেন, একজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে বক্তব্য দিতে বললে, তিনি বক্তব্য দেবেন না। অথচ নেতাগিরি করেন। এভাবে কি রাজনীতি করা যাবে? আপনারা কর্মী মূল্যায়ন চান, সে অনুযায়ী কাজ করেন না।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমি যাদুরচরের কর্তিমারী বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস করে দিয়েছি। কিন্তু অফিসের এক অংশ ভাড়া দিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজ। আর একাংশ অফিস হিসেবে ব্যবহার করছেন তিনি।
এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজ। তিনি উত্তরে বলেন, আপনি কথাটি ঠিক বললেন না। আপনি যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস তৈরি বাবদ কোনো টাকা দেননি। আপনি কখন কর্মী মূল্যায়ন করেছেন? এ কথা বলায় শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। একপর্যায়ে সবুজের ওপর হামলার করেন প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রাসহ দলের অন্য নেতারা পরিবেশ শান্ত করেন।
যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজ বলেন, আলোচনা সভায় আমাকে বক্তব্য দিতে বলা হয়। আমার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় বক্তব্য দেব না বলে জানাই। পরবর্তী সময়ে সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তার বক্তব্যে আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন। এ সময় আমি জবাব দিলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর অনুসারীরা ধাক্কাধাক্কি করে কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজকে বক্তব্য দিতে বলা হয়। তিনি বক্তব্য দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। পরবর্তীতে আমি বক্তব্য দেওয়ার সময় তার বিষয়ে কথা বললে তিনি চেয়ার থেকে হঠাৎ দাঁড়িয়ে ওঠেন এবং রুম থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে চেয়ারে বসানোর চেষ্টা করেন মাত্র। কোনো প্রকার মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
ফজলুল করিম ফারাজী/এসজে