রাতের খাবার খেয়ে মাদরাসার শিক্ষক-ছাত্রসহ ২৪ জন হাসপাতালে
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে তাহফিজুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল মডেল মাদরাসায় রাতের খাবার খেয়ে মাদরাসার তিন শিক্ষক ও ২১ ছাত্রসহ ২৪ জন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বুধবার (২১ জুন) রাতের খাবার খাওয়ার পর মাঝরাতে নালিতাবাড়ী পৌরশহরে ওই মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকালে তাদের নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
২৪ জন অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তানভীর ইবনে কাদের বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত সমস্যায় হাসপাতালে ২১ জন চিকিৎসাধীন। বাকি তিনজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার তাহফিজুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল মডেল মাদরাসায় ৬০ জন ছাত্র ও তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের খাবার রান্না করার জন্য একজন বাবুর্চি নিযুক্ত রয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় মাছ ও পুঁইশাক রান্না করা হয়। পরে অন্যান্য দিনের মতোই রাত সাড়ে ৯টায় সেই খাবার খান মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা।
পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদরাসার সহকারী অধ্যক্ষ অব্দুল জলিল অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা ও বমি অনুভব করেন। রাত ৩টার দিকে আরও কয়েকজন ছাত্র ও শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা হামিদুর রহমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে এসে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ নিয়ে যান। কিন্তু এতে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তিনিসহ ২৪ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
মাদরাসাটির ছাত্র রিফাত আহম্মেদ বলে, ‘রাতে আমরা পুঁইশাক ও মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে যাই। মাঝরাতে আমাদের অনেকের পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হয়। পরে হুজুর ওষুধ দেন। কিন্তু ওষুধেও ব্যথা না কমায় আজ সকালে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
শিক্ষার্থী জোবায়েরের মা বলেন, ‘হুজুররা ফোন করে জানান যে আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। স্যালাইন, ওষুধ খাইয়েও কাজ হয়নি। তাই হাসপাতালে এনেছে। খবর পেয়ে আমিও হাসপাতালে এসেছি।’
মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা রুটিন করে প্রতি সপ্তাহেই এমন খাবার খাই। এই প্রথম এমন হলো। তিনজন শিক্ষকসহ ২১ জন নালিতাবাড়ী হাসপাতালে এবং আরও তিনজন শেরপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তানভীর ইবনে কাদের বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ আটজন হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিনজনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখন মোট ২১ জন চিকিৎসাধীন।
ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জেআইএম