সাভারে দেখা মিললো সুলতান ও পাঠানের
শখে কিংবা বাণিজ্যিকভাবে সাভারের প্রায় প্রতিটি মহল্লায় রয়েছে গরুর খামার। কিন্তু তাদের ফাঁকে সন্ধান পাওয়া গেছে ভিন্ন এক মহিষের খামারের। যেখানে নানা জাতের তিনশোর বেশি মহিষ রয়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মহিষগুলো লালন-পালন করা হচ্ছে বলে জানান খামার মালিক।
সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশেই গড়ে উঠেছে কাইয়ুম এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামের এ খামার।
বুধবার (২১ জুন) খামারটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারির শেডগুলোতে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা রয়েছে মহিষগুলো। যেখানে রয়েছে মুররা, নিলারাভি, জাফরাবাদি ও গোলাপি রঙের অ্যালবিনো জাতের মহিষ। আকারের বিবেচনায় বাছাই করে আলাদা আলাদাভাবে রাখা হয়েছে মহিষগুলো।
খামারটিতে মহিষগুলোর পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন অন্তত ৩০ জন শ্রমিক। কেউ মহিষের খাবারের ব্যবস্থা করছেন, কেউ গোসল করাচ্ছেন, কেউবা আবার মহিষের শরীরে তেল মালিশ করছেন।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে থাকা এক জোড়া মহিষের দিক নজর যায়। সুঠাম দেহের মহিষ দুটির ভাবও যেন বেশ রাজকীয়। কৌতুহল নিয়ে খামারটির মালিক আব্দুল কায়ুমের কাছে প্রশ্ন করা হয় মহিষ দুইটি অন্যদের চেয়ে আলাদা কেন?
তিনি জানান, মহিষ দুইটির নাম রয়েছে। একটির নাম সুলতান আর আরেকটির নাম পাঠান। চলাফেরা আর স্বভাবগত আচরণের জন্য দেওয়া হয়েছে এই নাম। মহিষ দুইটি ভারতের গুজরাটের জাফরাবাদি জাতের। এদের একেকটির ওজন এক হাজার কেজিরও বেশি।
তিনি আরও জানান, সম্পূর্ণ অর্গানিক উপায়ে এখানে পশুগুলোকে লালন পালন করা হয়। এ খামারে সব ধরনের স্টেরয়েড বা মোটাতাজাকরণের ওষুধ ব্যবহার নিষিদ্ধ।
কীভাবে এত বিশাল আকারের হলো মহিষগুলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাধারণ একটা মহিষ যে খাবার খায় যেমন দানাদার খাবার, খড় ইত্যাদি আমরা শুধু সেই খাবারগুলোই খাইয়ে থাকি। পার্থক্য হলো খাবারের মানের সঙ্গে আমরা আপোষ করি না। বেশি দামের ভালো মানের খাবার আমরা খাওয়াই বেশি পরিমাণে। আর এটা সম্পূর্ণ পরিচর্যার বিষয়।
সুলতান আর পাঠান ৩ বেলা প্রায় ৩০-৩৫ কেজি করে খাবার খায়। দিনে ৫-৬ বার গোসল করানো হয়। একদিন পরপর সরিষার তেল মালিশ করা হয়। যাতে শরীরের চামড়া না ফেটে যায়। একইভাবে প্রত্যেকটি পশুকেই এখানে যত্ন নেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।
সাভার মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. শাহেদ হোসেন বলেন, আমরা এখন স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছি। মহিষের মাংসে ২ শতাংশের কম কোলেস্টরেল থাকে। গরুর মাংসে যা থাকে ৪ শতাংশের অধিক। মহিষের দুধে মিল্ক ফ্যাট থাকে গরুর চাইতে প্রায় দ্বিগুণ। যা মানুষের জন্য খুবই উপকারী। সেক্ষেত্রে মানুষ স্বাস্থ্য উপযোগীর দিকে লক্ষ্য রেখে মহিষের চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়ছে।
এফএ/জেআইএম