পানির তোড়ে ভেঙে গেলো নাগেশ্বরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ
অতিরিক্ত পানির চাপে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিয়ানী পাড়ায় দুধকুমার নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ভেঙে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার।
উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে বুধবার (২১ জুন) দুপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ভেঙে যায়।
বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা জাহান, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব প্রমুখ।
বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় লোকালয়ে জমে থাকা বৃষ্টির পানির সঙ্গে নতুন পানি যোগ হয়ে প্লাবিত হতে শুরু করছে বামনডাঙ্গার তেলিয়ানী, মালিয়ানী, বড়মানি, ধনিটারী, অন্তাইপাড়, সেনপাড়া, পাটেশ্বরী, বোয়ালেরডারা, পৌরসভার পূর্ব সাঞ্জুয়ারভিটাসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা। এরই মধ্যে এসব এলাকায় ভেসে গেছে বেশ কয়েকটি পুকুর। প্লাবিত হচ্ছে ঘরবাড়ি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবেদ আলী জানান, মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকেল থেকে তেলিয়ানীতে তার বাড়ির পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর দিয়ে দুধকুমারের পানি লোকালয়ে ঢুকতে থাকে। ক্রমে মাটি ক্ষয়ে স্রোতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। এতে সৃষ্ট হওয়া গর্তে তলিয়ে যেতে থাকে বন্যা নিয়ন্ত্রণে থাকা জিও ব্যাগগুলো। হঠাৎ পানির তীব্রতা বেড়ে গেলে বাঁধের ২৫০ মিটার অংশ বিলীন হয়ে যায়।
তেলিয়ানীপাড়া গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম বলেন, হঠাৎ বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে পানি ঢুকতে শুরু করছে। আমার এক বিঘা জমির পটোল ক্ষেতের চরম ক্ষতি হবে। না পারবো পটোল তুলতে, না পাবো বেচতে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নদীর স্থায়ী ভাঙনরোধে আমরা কাজ করছি। বাঁধের কিছু নিচু জায়গা দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। সে জায়গায় জিও ব্যাগ, জিও টিউব, বোল্ডার ফেলে উঁচু করা হচ্ছে। যাতে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকতে না পারে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৫৪১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও শুকনা খাবার মজুত রয়েছে। যেখানে প্রয়োজন হবে তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা হবে।
ফজলুল করিম ফারাজী/এসআর/জিকেএস