শেরপুরে বাল্যবিয়ে করতে গিয়ে বরের জেল


প্রকাশিত: ০৬:৪৬ এএম, ১৪ মার্চ ২০১৬

শেরপুরে বিয়ের আসরে হানা দিয়ে একটি বাল্যবিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে ১২ বছর বয়সী এক মাদরাসা ছাত্রী বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আর বাল্যবিয়ে করতে আসা বরের কপালে বউয়ের বদলে জুটেছে ১০ দিনের জেল। রোববার শেরপুর সদর উপজেলার তাতালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সাজাপ্রাপ্ত বর উজ্জ্বল মিয়া (২১) নালিতাবাড়ি উপজেলার মরিচপুরাণ গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে। সোমবার সকালে উজ্জ্বল মিয়াকে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার তাতালপুর গ্রামের এক বাসিন্দা ও শহরের নৌহাটা এলকার আল জামিয়াতুল ইসলামী আলিম মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর (১২) সঙ্গে নালিতাবাড়ি উপজেলার মরিচপুরাণ গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে উজ্জ্বল মিয়ার (২১) বিয়ে ঠিক হয়। রোববার সন্ধ্যায় ওই শিশু শিক্ষার্থীর বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হলে বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের নিকট থেকে জানতে পারেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে ওই বিয়ে বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এদিকে অভিযানে সংবাদ পেয়ে বিয়ে বাড়ির লোকজন এবং বরের আত্মীয়রা পালিয়ে গেলেও বর উজ্জ্বল মিয়াকে বিয়ে বাড়ি থেকে আটক করা হয়। তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বর উজ্জ্বল মিয়াকে ১০ দিনের জেল দেয়া হয়। পরে কনেকে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেবেন না এমন মুচলেকায় তার মা-বাবার হেফাজতে দেয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত বর উজ্জ্বল মিয়াকে রাতেই শেরপুর সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসন সব সময়ই তৎপর রয়েছে। সংবাদ পাওয়া মাত্রই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে বাল্যবিয়ের হাত থেকে ওই শিশু শিক্ষার্থী রক্ষা পেয়েছে। বিয়ে করতে আসা বরকে ১০ দিনের জেল দেয়া হয়েছে।

শেরপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, সাজাপ্রাপ্ত উজ্জ্বল মিয়াকে সোমবার সকালে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, ঝিনাইগাতীতে ইভটিজিং করার দায়ে মনির হোসেন নামে এক যুবকের ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার সন্ধ্যায় ঝিনাইগাতী উপজেলার গান্ধিগাঁও গ্রামে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম রেজা এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত মনির হোসেন গান্ধিগাও পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম রেজা জানান, বাকাকুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করতো মনির হোসেন। এ নিয়ে সামাজিকভাবে বিচার সালিশ করেও তাকে দমানো যাচ্ছিল না। রোববার আবার মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করলে তার বাবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হাতে-নাতে আটক করা হয়। পরে উপজেলা কমপ্লেক্সে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শুনানি শেষে মনিরকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

হাকিম বাবুল/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।