আম-লিচুর সঙ্গে মধু চাষ


প্রকাশিত: ০২:৪৯ এএম, ১৪ মার্চ ২০১৬

আম ও লিচুর মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে গেছে রংপুরের বিভিন্ন অঞ্চল। বিস্তৃর্ণ বাগান জুড়ে মুকুলের সমারোহ দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। এরই মধ্যে রংপুরের বদরগঞ্জে আম-লিচু বাগানে মৌ চাষ শুরু করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মৌ চাষী মাহফুজ ওয়াহিদ চয়ন।  

উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের কুমারপাড়া এলাকার আম-লিচু বাগান চাষী মাহফুজ ওয়াহিদ চয়ন জাগো নিউজকে জানান, শুধু সরিষার সময়ই মৌ চাষ হয় না, আম-লিচু বাগানেও যে মৌ চাষ করা যায় এটা আগে কখনও মাথায় আসেনি। সাতক্ষীরা থেকে আসা এক দল মৌয়ালের সঙ্গে কয়েক দিন আগে দেখা হলে তারা আমার আম-লিচু বাগানে মৌ চাষের কথা জানান। তাদের কথামতো আমি মৌ চাষে রাজি হই।  

চয়ন জানান, তার লিচু বাগানে মৌমাছির বাক্স রয়েছে আড়াইশটি। সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে বাক্সগুলো থেকে মধু সংগ্রহ করা হবে। এই মধু সংগ্রহ অভিযান চলবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১২ মণ মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। চলতি মৌসুমে এই বাগান থেকে ৫০ মণ মধু সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে। প্রতি মণ মধু বিক্রি করা হয় ৬-৭ হাজার টাকায়।

Rangpur

চয়ন আরও জানান, মূলত আম-লিচু বাগানে মৌ চাষের কারণে পরাগায়ন বেশি হবে। ফলে ফলনও বৃদ্ধি পাবে।

সাতক্ষীরা থেকে আসা মৌয়াল মোকারম হোসেন জাগো নিউজকে জানান, এই মধু দেশের বিভিন্ন কোম্পানির চাহিদা মিটিয়ে ভারতে রফতানি করা হয়। ভারতীয় মধু কোস্পানিগুলো সস্তা দামে মধু কিনে রফতানি করে। অথচ তারা আমাদের কাছ থেকেই মধু কিনে নেন।

তিনি আরও জানান, এই পেশার সঙ্গে যুব সমাজের একটি বড় অংশ জড়িত রয়েছে। সরকারি পৃষ্টপোষকতা না থাকায় সম্ভাবনাময় এই মধু চাষ শিল্পের তেমন কোন অগ্রসর হচ্ছে না। মধু চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসত তেমনি দূর হতো বেকারত্ব সমস্যা।

বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের জীববিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আম-লিচু ক্ষেতে মৌমাছি পরাগায়নে সহায়তা করে। মার্চের শুরু হতে আম-লিচুর মুকুল হতে মধু আহরণ শুরু হয়। সারাদেশে চাষীদের যদি আম-লিচু বাগানে ফলের পাশাপাশি মধু চাষের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া যায় তাহলে সকল কৃষকই অনেক লাভবান হবেন ।

Rangpur

তিনি বলেন, একটি জমিতে ১০৮টি কাঠের ফ্রেমে প্রতি সপ্তাহে চাষিরা ৩ মণের অধিক মধু সংগ্রহ করতে পারেন।

কথা হয় উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায়ের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে জানান, ১০ বছর আগেও বদরগঞ্জ উপজেলায় ফলের বাগান ছিল ১৫০ হেক্টর । বর্তমানে তা বেড়ে ৭০০ হেক্টরে ছাড়িয়ে গেছে। আম লিচুর পাশাপাশি মৌ চাষ করে কৃষকরা একদিকে যেমন নিজের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে পারেন অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করতে সহযোগিতাও করতে পারেন তারা ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, উপজেলার বহু আম ও লিচু বাগানে এখন মধু চাষ হচ্ছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।