ভাঙনে বিলীন চিলমারীর খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ
ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ। রোববার (১৮ জুন) সকালে ভাঙনের কবলে পড়ে কলেজের ভবনটি নদে ডুবে যায়। এতে করে সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বিঘ্নিতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০২০ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এ ভবনটি হস্তান্তর করে। গত বছর তীব্র ভাঙনে নয়ারহাট ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার বাস্তুহারা হয়। ভাঙনে বিলীন হয় দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাংশ। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অনুরোধ করলে নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানো হয়। গত এক বছরে ভাঙনের কবল থেকে প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে আবারও ভাঙনের কবলে পড়ে ইউনিয়নের একমাত্র স্কুল অ্যান্ড কলেজটি বিলীন হয়ে গেল। ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ওই এলাকায় ভাঙন হুমকিতে রয়েছে দক্ষিণ খাওরিয়া বাজারসহ স্থানীয় শতাধিক বসতভিটা। ভাঙন আতঙ্কে অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন।
কলেজ অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানটি নয়ারহাট ইউপির একমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অষ্টমিরচর ইউনিয়নসহ দুই ইউনিয়নের একমাত্র কলেজ এটি। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বিলীন হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন দুটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিঘ্নিত হয়ে পড়ল।
আরও পড়ুন: আড়িয়াল খাঁ নদের তীব্র ভাঙনে আতঙ্ক
নয়ারহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু বলেন, প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত থাকে। কিন্তু যে সময় ভাঙন রোধে কাজ করার দরকার সেই সময় কোনো কাজ হয় না। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে আগামী দুয়েক মাসের মধ্যে কয়েকশ হেক্টর আবাদি জমিসহ শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে যাবার শঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজটি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়। ভবনটি বিলীন হলেও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যেন ব্যাহত না হয় সেজন্য আমরা পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে প্রায় দুই কিলোমিটার অভ্যন্তরে স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম শুরু করেছি।
এছাড়াও গত মাসের শেষের দিকে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরভগবতীপুরে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে করে চরভগবতীপুরে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ চরভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিক নদী গর্ভে বিলীন হয়। চলতি মৌসুমে পাহাড়ি ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক।
ফজলুল করিম ফারাজী/আরএইচ/জেআইএম