রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বেড়েছে কোটিপতি প্রার্থী
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০১৮ সালের তুলনায় এবার শিক্ষিত, ব্যবসায়ী ও কোটিপতি প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।
শনিবার (১৭ জুন) রাজশাহী নগরের একটি রেস্তরাঁয় সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাজশাহী জেলা কমিটি আয়োজিত অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ সরকার।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে স্বল্পশিক্ষিত প্রার্থীর (এসএসসি ও তার নিচে) হার কমেছে। ২০১৮ সালে ছিল ৫৪.৩৭ শতাংশ, যা এবার ৫২.৩৭ শতাংশ। অপরদিকে উচ্চ শিক্ষিত (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী) প্রার্থীর হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের ২৫.৩৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালের নির্বাচনে এই হার দাঁড়িয়েছে ২৯.৬৩ শতাংশ। সল্পশিক্ষিত প্রার্থীর হার হ্রাস পাওয়া এবং উচ্চ শিক্ষিত প্রার্থীর হার বৃদ্ধি পাওয়া নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।
দিলীপ সরকার বলেন, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে ফৌজদারি মামলা সংশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান মামলার হার হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বর্তমান মামলা ছিল ৩১.৩৩ শতাংশ, এবারের নির্বাচনে তা ২৭.১৬ শতাংশ। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে অতীত মামলা সংশিষ্টতা হার বিগত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের চেয়ে অধিক। ২০১৮ সালে অতীত মামলার হার ছিল ২১.১৯ শতাংশ; এবারে তা দাঁড়িয়েছে ২৭.১৬ শতাংশ।
সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে স্বল্প আয়ের প্রার্থীর হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৮২.০২ শতাংশ, এই নির্বাচনে তা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৭৬.৫৪ শতাংশ। ২০১৮ সালে কোটি টাকার অধিক উপার্জনকারী কোনো প্রার্থী না থাকলেও এবারের নির্বাচনে তিনজন (১.৮৫ শতাংশ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় কম সম্পদের মালিকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার হার হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৫ লাখ টাকার কম সম্পদের মালিক ছিলেন ৬৭.২৮ শতাংশ প্রার্থী; এবারের নির্বাচনে এই হার ৫০ শতাংশ (সম্পদের ঘর পূরণ না করা প্রার্থীসহ)। অপরদিকে, কোটিপতির হার এই নির্বাচনে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত নির্বাচনে কোটিপতির হার ১.৮৪ শতাংশ থাকলেও, এবারের নির্বাচনে তা হয়েছে ৩.৭০ শতাংশ।
সুজনের এই কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় যে, এবারের নির্বাচনে ব্যবসায়ীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার হার গতবারের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার ছিল ৪৮.৩৮ শতাংশ; এবারের নির্বাচনে তা দাঁড়িয়েছে ৫৮.৬৪ শতাংশে।
দিলীপ সরকার আরও বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন তেমন প্রতিযোগিতামূলক না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যেহেতু বিএনপি এবং ইসলামী আন্দোলন নির্বাচনে আসছে না, তাই রাজশাহী সিটি নির্বাচন তেমন প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ হবে না। তবে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সবার প্রতি সমান আচরণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
রাজশাহী জেলা সুজনের সভাপতি আহম্মেদ শফিউদ্দিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মহানগর সুজনের সভাপতি পিয়ার বখশ, সুজন জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম, সুজনের সমন্বয়কারী মিজানুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সাখাওয়াত হোসেন/এমআরআর/জেআইএম