জামালপুর
দুর্বৃত্ত হামলায় গুরুতর আহত সাংবাদিক নাদিম, অবস্থা সংকটাপন্ন
সংবাদ প্রকাশের জেরে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের অভিযোগ, বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নির্দেশে তার লোকজন এ হামলা চালিয়েছেন।
বুধবার (১৪ জুন) রাতে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, রাতে পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে নাদিমের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে ফেলে পালিয়ে যান তারা। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, নাদিমের অবস্থা সংকটাপন্ন।
নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগমের অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশের জেরে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর লোকজনরা নাদিমের ওপর এ হামলা চালান। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।
নাদিমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাত বলেন, চেয়ারম্যান বাবুর নির্দেশে তার ক্যাডার বাহিনী আমার বাবাকে বেধড়ক মারধরের একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ২টার দিকে কয়েকবার বমি করেছেন। এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু দাবি করেন, তার সঙ্গে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের কোনো শত্রুতা নেই। তাই এই হামলায় তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এস এম শহিদুর রহমান বলেন, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়েছে। রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। রোগী ঝুঁকি মুক্ত নন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়েছিল। তবে নাদিম অচেতন থাকায় হামলাকারীদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
এদিকে, সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামালপুর প্রেস ক্লাব এবং জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে নাদিমের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১১ এপ্রিলও নাদিমের ওপর একবার হামলার ঘটনা ঘটে। সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে তার ওপর ওই হামলা করা হয়েছিল।
মো. নাসিম উদ্দিন/এমআরআর/এএসএম