বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, তবু ৬ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযোগ
বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ থাকার পরও তিনটি আবাসিক ও তিনটি বাণিজ্যিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের বিরুদ্ধে। এতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া গ্রাহকরা পড়েছেন বিপাকে।
তবে বিল পরিশোধ থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) রমেন্দ্র চন্দ্র রায়।
বুধবার (১৪ জুন) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাড়াশ পৌর এলাকার থানা পাড়া মহল্লার খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীরের তিনটি বাণিজ্যিক ও দুটি আবাসিক সংযোগসহ তার ভাইয়ের একটি আবাসিক বিদ্যুৎ লাইন মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিচ্ছিন্ন করেছে জোনাল অফিস।
খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীরের ছেলে শাফি জাহাঙ্গীর অভিযোগ করে বলেন, আমরা যখন ২০২১ সালের শেষের দিকে জিকেএস হাসপাতালে শিল্প সংযোগটি নেওয়ার চেষ্টা করি, তখন আমাদের পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয় ট্রান্সফরমার ঘাটতির কারণে সংযোগটি দিতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে নিজ অর্থায়নে ট্রান্সফরমার কিনলে দ্রুত সংযোগ দেওয়া হবে। ট্রান্সফরমার কেনার মূল্যের টাকা বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে প্রতি মাসে সমন্বয় করা হবে। সে অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনের তাগিদে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে ট্রান্সফরমার কিনে সংযোগ নেই। এতদিন প্রত্যেক মাসের বিল পরিশোধ করা হলেও সম্প্রতি হাসপাতালের তিন মাসের বিল বকেয়া পড়েছে ৪৪ হাজার ২৫৭ টাকা। যার কিছু টাকা আমরা সেই ট্রান্সফরমার কেনার মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করতে বললেও তারা না শুনে সোমবার (১২ জুন) বিকেলে হঠাৎ হাসপাতালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আসে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজনরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজে বাধা দেয়। আমরা হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তাদের সঙ্গে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। আমরা গিয়ে হাসপাতালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করতে অনুরোধ করি। কিন্তু ওইদিন রাতেই আমার বাবার নামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়। শুধু তাই নয়, ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার (১৩ জুন) আমাদের পরিবারের অন্য ছয়টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তারা। যার প্রত্যেকটির বিল পরিশোধ।
ভুক্তভোগী খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, আমার পুরাতন বাড়ি, মার্কেট ও ফার্মেসির দোকানসহ ভাইয়ের বাসার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ আছে। এরপরও হিংসাত্মকভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। বিল পরিশোধের পরও কেন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো। অন্যদিকে হাসপাতালের বিষয়টি নিয়ে আমিসহ আমার ছেলে, ভাই ও দুই ভাতিজার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে ডিজিএম।
তাড়াশ পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) নিরাপদ দাস জাগো নিউজকে বলেন, জিকেএস হাসপাতালে তিন মাসের বকেয়া বিল আদায়ের জন্য গেলে এজিএম রাব্বুল হাসানসহ আমাদের কর্মচারীদের ওপর হামলা, গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা দুই লাখ টাকা, মোবাইল ফোনসহ বৈদ্যুতিক কাজে ব্যবহৃত মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
তবে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ থাকার পরও তাদের অন্য ছয়টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএমসহ কর্মচারীদের ওপর হামলা, দুই লাখ টাকা, মোবাইল ফোনসহ বৈদ্যুতিক কাজে ব্যবহৃত মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একটি মামলা হয়েছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এম এ মালেক/এসজে/জিকেএস