খুলনায় দাম কমেছে পেঁয়াজের, সবজি আগের মতোই
খুলনায় পেঁয়াজের বাজারে সুখবর এলেও চড়া রয়েছে সবজির দাম। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পেঁয়াজের আমদানি। ফলে খুলনার বাজারে গত তিন-চার দিনে কেজিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। আমদানি বাড়লে এ দাম আরও কমে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
খুলনার টুটপাড়া জোড়াকল বাজার, চানমারী বাজার, রূপসা বাজার ও মিস্ত্রিপাড়া বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমদানির আগে এসব বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
জোড়াকল বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা গোলাম হোসেন, আব্দুল্লাহ ও মিলন জানান, বৃহস্পতিবারও তারা ৮০ টাকায় দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। কিন্তু আমদানি বেড়ে যাওয়া এখন দেশি পেঁয়াজের দিকে ক্রেতারা খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এতে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম, দাবদাহে নাগালের বাইরে সবজি
সোনাডাঙ্গা পাইকারি বাজারের মোরেলগঞ্জ বাণিজ্য ভাণ্ডারের মালিক আব্দুল মালেক ও বড় বাজারের আব্দুল্লাহ ভাণ্ডারের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজ আমদানির পর দেশি পেঁয়াজে ভাটা পড়ে যাওয়ায় এখন তা ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পাইকারি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে।
অন্যদিকে, অনাবৃষ্টি আর দাবদাহের কারণে খুলনার বাজারগুলোতে সবজির সরবরাহ কমে যাবার অজুহাতে বাড়িয়ে দেওয়া সবজির দাম এখনও আগের মতই চড়া রয়েছে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা মোসলেম হাওলাদার বলেন, গত সপ্তাহের মতই বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। এছাড়া কাঁকরোল, করলা, ঝিঙে, কুশি ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, তবে আমদানি করা পটল ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কচু ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।
আরও পড়ুন: খুলনায় ভোটের দিন বন্ধ থাকবে যান চলাচল
জোড়াকল বাজারে ব্যবসায়ী রবিউল ও বাদশা বলেন, বাজারে অনেক সবজি বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে সেই সবজির দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। সকালে যে বেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বিকেলে তা ৪০/৫০ টাকায় নেমে যাচ্ছে। আবার বিকেলে যারা টাটকা সবজি আনছেন তারা আবার ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। এভাবে সকালের মালের দাম বিকেলে কমছে। আবার বিকেলে আনা মালামালের দাম রাতে কমে যাচ্ছে।
অন্যদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, লেয়ার ২২০ টাকা, সোনালী ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জোড়াকল বাজারের মুরগি বিক্রেতা মনির, লিপন ও বাবু।
তারা বলেন, বর্ষা আসার আগে খামার খালি করতে চাইছেন খামারিরা। ফলে দাম একটু কমের দিকে। তাছাড়া আর কয়দিন পরই কোরবানির ঈদ। সে সময় মুরগির চেয়ে ক্রেতারা গরু ও ছাগলের মাংসের দিকে ঝুঁকবেন। ফলে মুরগি বিক্রি কমে যাবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন বলেন, বাজারে যেকোনো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে হলে তার সুনির্দিষ্ট কারণ থাকা লাগে। পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবার পর থেকেই দাম কমতে শুরু করেছে। এখন কেউ বেশি দামে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছে না।
আরও পড়ুন: বরিশালের তালের শাঁসের কদর বেড়েছে দিনাজপুরে
তিনি আরও বলেন, শুধু পেঁয়াজ নয়, অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির খবর পেলেই আমরা সেখানে অভিযান চালাবো। আর বাজারগুলোতে আমাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। সহজে কেউ ক্রেতাদের ঠকাতে পারবে না।
আলমগীর হান্নান/জেএস/এমএস