বরগুনায় গরমে চার্জার ফ্যানের সংকট, বেড়েছে দাম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ০৮ জুন ২০২৩

সারাদেশে চলমান তীব্র গরমের কারণে বরগুনায় ফ্যানের দোকানে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। বিশেষ করে লোডশেডিংয়ের সময় গরমে স্বস্তি পেতে চার্জার ফ্যান কিনতে আগ্রহী বেশিরভাগ ক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ কয়েকদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রতিটি ফ্যানের। অন্যদিকে দোকানিদের দাবি আমদানিকারকরা দাম বাড়ানোর কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর ফ্যানের দাম বেড়েছে।

চাহিদা বাড়ায় বরগুনায় এসব ফ্যানের সংকট তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি ফ্যানের মূল্য বেড়েছে আকার ও কোম্পানিভেদে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে দাম শুনে অনেকেই না কিনে চলে যাচ্ছেন। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে বেশি দামেই কিনছেন। ভিশন, ওয়ালটন, ক্লিক, সানকা, সিঙ্গারসহ নানা ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে দোকানে। এছাড়াও ছোট ও টেবিল চার্জার ফ্যান রয়েছে।

বরগুনার বিভিন্ন মার্কেটের ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা যায়, লোডশেডিংয়ের কারণে গরমের অস্বস্তি থেকে বাঁচতে চার্জার ফ্যান কিনতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। বিদ্যুৎ না থাকলেও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা এ ফ্যানগুলো চালানো যায়। তাছাড়া ফ্যানের পাশাপাশি চার্জার লাইটও কিনছেন ক্রেতারা। বেশ কয়েকদিন ধরে গরমের কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। এর ফলে ফ্যানের চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে দামও বেড়েছে। বর্তমানে যেসব চার্জার ফ্যান ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে তা গত বছর ছিল ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এছাড়াও চার্জার ফ্যানগুলো বেশি বিক্রি হওয়ায় বরগুনায় সংকট তৈরি হয়েছে ভালো মানের চার্জার ফ্যানের।

আরও পড়ুন: তীব্র গরমে বেড়েছে ডাবের চাহিদা, দামও তুঙ্গে

সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি বাজার নামক এলাকা থেকে ফ্যান কিনতে আসা মো. মোশারফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, গত তিনদিন আগে চার্জার ফ্যান কিনতে বাজারে এলে দোকানে কোনো ফ্যান পাইনি। তিনদিন পরে আসতে বললে এখন এসে দেখি প্রতিটি ফ্যানের মূল্য বেশি। ছোট চার্জার ফ্যান যা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দাম ছিল তা এখন একদাম ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। কোন উপায় না পেয়ে ফ্যান কিনতে না পেরে বিভিন্ন দোকানে ঘুরছি।

আয়লা পতাকাটা এলাকা থেকে আসা আরেকজন ক্রেতা মো. ইমরান হোসেন বলেন, অনলাইনে ছোট একটি চার্জার ফ্যানের দাম ১১০০ টাকা দেখে দোকানে এসে কিনতে হয়েছে ১৪০০ টাকায়। আমরা সাধারণ মানুষ গরমে স্বস্তি পেতে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে ফ্যান কিনতে হয়েছে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর রোড এলাকার জামান ইলেকট্রনিক্স নামের একটি দোকানের ব্যবসায়ী মো. জোহা জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে লোডশেডিংয়ের কারণে চাহিদা বাড়ায় প্রতিটি চার্জার ফ্যানের প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। তাছাড়া এখন আমাদেরকে ঢাকা থেকে চাহিদামত বিক্রির জন্য ফ্যান দিতে পারে না।

আরও পড়ুন: নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাজারে আসছে ‘হাঁড়িভাঙা আম’

মেসার্স খাঁন ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসায়ী মো. জামাল হোসেন পান্না বলেন, যে ফ্যান আগে আমারা ৩ হাজার ৩০০ টাকায় কিনতাম সে ফ্যান কিনতে হয় ৫ হাজার টাকায়, তারপরে পরিবহন, ঘাট ও লেবার খরচ মিলেয়ে ৫ হাজার ৩০০ বা ৪০০ টাকায় সীমিত লাভে বিক্রি করতে হয়। এতে আমাদের তেমন কোনো ব্যবসা থাকে না। ঢাকা থেকে বর্তমানে আমাদের চাহিদামত ফ্যান দিচ্ছে না। এতে করে ফ্যানের সংকট তৈরি হয়েছে। ১০ পিস ফ্যানের অর্ডার করলে ৪ পিস পাওয়া যায় আবার ২০ পিস অর্ডার করলে ৬ পিস ফ্যান পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বরগুনা ইলেকট্রনিক্স সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মো. সাজ্জাত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, চার্জার ফ্যানের যারা আমদানিকারক তারা দোকানে ফ্যান বিক্রি না করে দ্বিতীয় কোনো পক্ষের কাছে বিক্রি করেন। তাদের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে বলে কোনো ফ্যান নাই। এ সুযোগে ওই দ্বিতীয় পক্ষ বেশি দামে ফ্যানগুলো দোকানে বিক্রি করেন। গরমের শুরুতে যে ফ্যানের দাম ২ হাজার ৪৫০ টাকা ছিল সে ফ্যান এখন ৪ হাজার ৫০০ টাকায় কিনতে হয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে গরু উপহার দিতে চান পাকুন্দিয়ার বুলবুল

তিনি আরও বলেন, আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা একত্রে বেশি টাকার পণ্য কিনতে পারি না। আবার অনেক সময় টাকা পাঠিয়ে দিয়েও কোনো পণ্য পাই না। টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। পরে আবার বেশি টাকায় ওই পণ্যই আমদের কাছে বিক্রি করেন। এ কারণেই বিশেষ করে বরগুনায় চার্জার ফ্যানের সংকট তৈরি হয়েছে।

জেএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।