এক লাইট, এক ফ্যানের বিল ৭ হাজার, দিশেহারা বিধবা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ১০:০৪ এএম, ০৪ জুন ২০২৩

কুড়িগ্রামে একটি লাইট ও একটি ফ্যানের জন্য বিদ্যুৎ বিল এসেছে সাত হাজার ২০০ টাকা। এতে করে বিপাকে আছেন কাছিরন বেওয়া নামের এক বিধবা।

কাছিরন বেওয়া জেলার উলিপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামদাস ধনিরাম সরদার পাড়া গ্রামের মৃত কাশেম আলীর স্ত্রী। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়ে বাড়িতে একা বসবাস করেন। সরকারের দেওয়া বিধবাভাতা আর অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

বিদ্যুতের এমন অস্বাভাবিক বিলে কাছিরনের ঘুম উড়ে যাওয়ার উপক্রম। বিলের কাগজ নিয়ে এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরছেন। দুদিন পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির উলিপুর অফিসে গেলেও কোনো সমাধান মেলেনি। বিল নিয়ে দিনমজুর এ নারী এখন দিশাহারা।

আরও পড়ুন: একটা বাল্ব ও ফ্যানের বিল ৭৮৪৩০!

কাছিরনকে দেওয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মে মাসের বিলের কাগজে দেখা গেছে, বর্তমান ইউনিট ৬০, পূর্ববর্তী ইউনিট ০ ও ৭১৬। ব্যবহৃত ইউনিট উল্লেখ করা হয়েছে ০। তবে গড় বিল উল্লেখ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪৬২ টাকা। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধ করলে কাছিরনকে অন্যান্য চার্জসহ ৭ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।

kudigram

কাছিরন বেওয়া জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার পর ঘরে একটি লাইট আর একটি ছোট্ট ফ্যান ব্যবহার করে আসছি। এর বাইরে কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহার করি না। প্রতি মাসে ১৩০ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। কম বিল আসায় মার্চ মাসে তার মিটারটি পরিবর্তন করে নেওয়া হয়। এরপর গত দুই মাস তাকে বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়নি। মে মাসে তাকে ৭ হাজার ২০০ টাকা বিল দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মাইনষের বাড়িত কাজ করি আর সরকারের ভাতার টাকায় কোনো রকম সংসার চলে। একটা লাইট আর ফ্যান চলেয়া এত টাকা বিল হয় কেমন করি। বিলের কাগজ আসার পর ভাত রাইনবারে পাই না। চিন্তায় চিন্তায় ইয়ার উয়ার বাড়ি যাই। বিলের কাগজ নিয়া দুদিন অফিস গেছি। কোনো কথায় শোনে না। ৭ হাজার ২শ টাকা পরিশোধ করবার কইছে। আমি গরিব মানুষ, এত টাকা কেমন করি পরিশোধ করি। তোমরা ইয়ার সমাধান করি দ্যাও।’

কুড়িগ্রামের লালমনিরহাট পল্লী বিদুৎ সমিতির উলিপুর অফিসের ডেপুটি জোনাল ম্যানেজার (ডিজিএম) সোহানুর রহমান বলেন, বিলের কাগজে যে রিডিং উল্লেখ করা হয়েছে সেটি আমার কাছেও অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। আমি বিলিং সহকারীর কাছে জানলাম, এটাতে সমস্যা হয়েছে। সংশোধন করা হবে।

বিল প্রস্তুতকারীর বরাতে ডিজিএম বলেন, পুরাতন মিটারের একটি ইউনিট ভুলবশত এ বিলে উঠে গেছে। বিলিং সহকারী আগের নষ্ট মিটারের ইউনিট এ বিলে দিয়ে থাকতে পারেন। আগামীকাল সকালে এলে বিষয়টি দেখে আমরা সংশোধন করে দেবো।

ফজলুল করিম ফারাজী/আরএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।