শায়েস্তাগঞ্জে আঞ্চলিক হাঁস খামারে ৮ বছর পর বাচ্চা উৎপাদন
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারে দীর্ঘ আট বছর বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ থাকার পর ফের উৎপাদন শুরু হয়েছে।
উপজেলার বিরামচর এলাকায় ২০ বছর আগে গড়ে তোলা হয় আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার। কিন্তু খামারটি চালুর কয়েক বছর পরই নানা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় বাচ্চা উৎপাদন।
জানা যায়, ওই অঞ্চলের বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারটি স্থাপন করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ২০০৩ সালে খামারটি স্থাপন করা হলেও কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালে। এরপর মাত্র তিন বছর সেখানে হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন করা হয়।
২০০৯ সাল থেকে নানা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় বাচ্চা উৎপাদন। যদিও পরবর্তীকালে খামারটি পুনরায় সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালের শেষ দিকে তিন একর জায়গাজুড়ে খামারটি সম্প্রসারণ করা হয়। নির্মাণ করা হয় অফিস ভবন, হ্যাচারি ভবন, স্টোর ভবন, ডরমিটরি ভবন, পাম্প হাউজ, আটটি ব্রুডার, গ্রোয়ার ও লেয়ার শেড এবং গ্যারেজ ও নাইটগার্ড রুম। সেই সঙ্গে স্থাপন করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের দুটি বাচ্চা ফুটানোর ইনকিউবেটর।
২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় এর কার্যক্রম শুরু হলেও বাচ্চা উৎপাদন বন্ধই ছিল। বাচ্চা ফুটানোর ইনকিউবেটরগুলোতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উৎপাদন করা যায়নি। অথচ মাসে ২৭ হাজার হাসের বাচ্চা ফুটানোর ক্ষমতাসম্পন্ন খামার এটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র তিন হাজার বাচ্চা উৎপাদন করেছে খামার কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছর নতুন কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন যোগদান করার পর তিনি উদ্যোগ নিয়ে ইনকিউবেটর সচল করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। অনুমোদন পেয়ে তিনি বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ইনকিউবেটর, এসিসহ আদ্রতা সেন্সর, তাপমাত্রা সেন্সর ও টার্নিং সিলিন্ডার বিদেশ থেকে আমদানি করে যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে খামার সচল করেন। এরপর গত ৯ মে বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ইনকিউবেটরে ডিম বসান।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নাজিম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ইনকিউবেটরের যান্ত্রিক ত্রুটি ও জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘদিন খামারে বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হয়নি। বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ এনে ইনকিউবেটরগুলো সচল করা হয়েছে। যন্ত্রাংশ মেরামত করে আবারও হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা গত ৯ মে ইনকিউবেটরে ডিম দিয়েছি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে বাচ্চা ফুটে যাবে। এখন বড় বাধা হচ্ছে বিদ্যুৎ। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রয়োজন।
এমআরআর/এমএস