বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ

ঢাকার সঙ্গে কমবে ১১২ কিমি দূরত্ব, বাঁচবে ৪ ঘণ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ১১:২৬ এএম, ২৯ মে ২০২৩

বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে রেলপথ সংযোগের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো। নকশা প্রণয়ন শেষে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জুনে শুরু হচ্ছে রেলপথের উভয়পাশের জমি অধিগ্রহণ। এর জন্য ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে রোববার (২৮ মে) সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রকল্পটির সার্বিক বিষয়ে এক বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলছেন, রেলসড়কটি নির্মাণ হলে ঢাকার সঙ্গে বগুড়ার ১১২ কিলোমিটার পথ কমে যাওয়ার সঙ্গে সময় বেঁচে যাবে প্রায় ৪ ঘণ্টা।

বৈঠকে ছিলেন, বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী, বগুড়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক, রেল কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

বৈঠক শেষে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, প্রকল্পটির নকশা প্রণয়ন শেষ করে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণের জন্য ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রেলপথের ডুয়েল গেজের জন্য এসব জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রথমে ডুয়েল গেজ লাইন এবং পরবর্তীতে ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল করবে।

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, এ রেলপথে মোট ৯টি স্টেশন যুক্ত হবে। এগুলো হলো এম মনসুর আলী স্টেশন, রায়পুর স্টেশন, নলকা কৃঞ্চদিয়া স্টেশন, চান্দাইকোনা স্টেশন, রায়গঞ্জ স্টেশন, ছোনকা স্টেশন, শেরপুর স্টেশন, আড়িয়া বাজার স্টেশন ও রানিরহাট স্টেশন। এর মধ্যে মনসুর আলী স্টেশনে তিনটি জংশন তৈরি হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত আরও তিন কিলোমিটার রেলপথ তৈরি করায় ট্রেনগুলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু পার হয়ে সারা দেশের সঙ্গে চলাচল করবে। এসব স্টেশনের বাইরে বগুড়ার কাহালুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হবে রেলপথের। বর্তমানে বগুড়া থেকে ট্রেনে সিরাজগঞ্জ যেতে সান্তাহার জংশন, নাটোর ও ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরতে হয়। নতুন রেলপথ নির্মাণ হলে দূরত্ব কমে যাবে প্রায় ১২২ কিলোমিটার।

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, বগুড়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ। এরই মধ্যে জমি অধিগ্রহণের যেসব কার্যক্রম তা শুরু হয়েছে। এসব বিষয় নিয়েই মূলত প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত। প্রকল্পটি শেষ হলে উত্তরাঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যে আরও প্রসার হবে। সময়, খরচ ও দূরত্ব কমে সময়ের মধ্যে মানুষ যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে।

বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি মতে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ হবে। বগুড়ার উন্নয়নে কোনো কমতি থাকবে না। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে সব ধরনের কাজ করা হবে। এ কাজ শেষ হলে বগুড়ার উন্নয়ন দ্রুত হবে।

প্রকল্প কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) যৌথ অর্থায়নে এ রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। ২০২৬ সালে নির্মাণকাজ শেষ হবে। রেলপথ নির্মাণে প্রাথমিক সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও তা অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলা অবস্থায় বাড়তে পারে। দুই জেলায় মোট ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া অংশে প্রায় ৫০০ একর ও সিরাজগঞ্জ অংশে ৪৬০ একর।

জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকার এরই মধ্যে ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। নকশা তৈরির কাজও শেষ হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দুটি রেলপথ নির্মাণ হবে। বগুড়া রেললাইন থেকে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার এবং অপরটি বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রানিরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার নির্মাণ করা হবে।

এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।