রিকশার চাকা ঘুরলেই চলে সেন্টুর সংসার, মেলে অক্সিজেন সিলিন্ডার
রাজশাহী নগরীতে চলাচল করে প্রায় ৩০ হাজার আটোরিকশা। এতসব রিকশার মাঝে নগর ভবন এলাকায় একটি রিকশায় চোখ আটকে গেলো। অন্যসব রিকশার মতোই এটি। তবে যিনি রিকশা চালাচ্ছেন তার বসার পাশের সিটে আছে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার। সেখান থেকে অক্সিজেন নিয়েই রিকশা চালান তিনি।
এই রিকশাচালকের নাম মাইনুরজ্জামান সেন্টু (৭০)। রাজশাহী নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা তিনি। দাম্পত্য জীবনে তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বিয়ের পর মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে। আর সবশেষ ছেলেও বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি পবা উপজেলার দারুশায় চলে গেছেন। তাই সেন্টুর রিকশার চাকা ঘুরলে চলে সংসার, জোটে অক্সিজেন সিলিন্ডারের টাকা।
রোববার (১৪ মে) নগরভবন এলাকায় রিকশায় যাত্রী তুলতে দেখা গেলো সেন্টুকে। তিনি বলেন, সাত বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যার কারণে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছি। আমার আগে ভাজাপোড়ার দোকান ছিল। ২০১৫ সালের দিকে সেই দোকান বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালের দিকে একটি এনজিও থেকে ঋণ করে ও কিছু ধার নিয়ে ৮০ হাজার টাকায় একটি রিকশা কিনি। তারপর থেকে রিকশা চালাই। প্রতিদিন আমার ৬০০ টাকার ওষুধ লাগে।
সেন্টুর স্ত্রী চম্পা বেগম বলেন, সাত বছর আগে থেকে তার অসুখ। গেলো তিন বছর থেকে বেশি অসুস্থ হয়ে গেছে। এখন প্রতিদিন তিনটি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগে। রিকশা চালিয়ে আমাদের দুই মানুষের সংসারের খরচ এবং তার অক্সিজেনসহ ওষুধ কেনে।
তিনি বলেন, আত্মীয়-স্বজন সবাই আছে, বিপদে কেউ নেই। আর তারাই বা কত দেবে? আপনারা সবাই একটু পারলে সাহযোগিতা করুন। রোববার রিকশা চালিয়ে এসে অসুস্থ হলে রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি জানালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্বাস আলী সরদার বলেন, তাকে আমার কাছে পাঠিয়েন, বিষয়টি দেখবো।
সাখাওয়াত হোসেন/এমআরআর/এমএস