ঘূর্ণিঝড় মোখা

জলোচ্ছ্বাস আতঙ্কে সেন্টমার্টিনবাসী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ১০:৫৬ এএম, ১৪ মে ২০২৩

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এর প্রভাবে উত্তাল সাগর। সেন্টমার্টিনসহ কক্সবাজার উপকূলে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের গতিবেগও বেড়েছে। নাফ নদীতে পানির উচ্চতা বাড়ছে।

এদিকে এসব এলাকায় ৮ থেকে ১২ থেকে ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ পরিস্থিতিতে উপকূলে অবস্থানরত মানুষজন আতঙ্কে আছেন। তবে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও অনেকে এখনো যাননি।

টেকনাফের বাহারছড়া উপকূলের বাসিন্দা মো. খালেদ মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, সাগরে পানির উচ্চতা বাড়তে শুরু করেছে। সঙ্গে বাড়ছে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করা অনেক মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি।

cox-2

হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, আগের ঘূর্ণিঝড়গুলোর চেয়ে মোখার ভয়াবহতা বেশি হবে- এ প্রচারণার পর থেকে ভয়ে আছি। রোববার ভোর থেকে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি বাড়তে থাকায় আতঙ্কটা আরও একটু বেড়েছে। ভয় থাকলেও হোয়াইক্যংয়ের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষ তেমনটি যায়নি। নাফ নদীতে পানির উচ্চতা বাড়ছে।

সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লাহ জাগো নিউজকে জানান, দ্বীপে স্থানীয় ও বাইরের ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজারের অধিক লোকজন অবস্থান করছেন। হোটেল, স্কুল-মাদরাসা ও সাইক্লোন শেল্টারে এত মানুষ অবস্থান করা কষ্টকর। শেল্টারগুলো সাগরের কিনারে। তাই জলোচ্ছ্বাস হলে কেউ নিরাপদ নয়।

cox-2

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর কাজ অব্যাহত আছে। নারী-শিশুরা আশ্রয়কেন্দ্রে আছে। পুরুষগুলো এলাকার পরিস্থিতি অবলোকন করছি। পানি দ্বীপে উঠছে দেখলে পুরুষরাও আশ্রয়কেন্দ্রে উঠে যাবে সেভাবে প্রস্তুতি আছে। বাতাস ও বৃষ্টি বাড়ায় সবার মধ্যে জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক ভর করছে।

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন জাগো নিউজকে বলেন, উপকূলের বাসিন্দাদের অনেকে এরইমধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে এসেছে। যেকোনো দুর্যোগে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে সিপিপি সদস্যসহ বিভিন্ন ভলান্টিয়ার প্রস্তুত আছে।

cox-2

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত থেকে লোকজনকে নিরাপদ রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দাদের বিভিন্ন হোটেল-মোটেলসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উঁচু ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার মজুত আছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান জাগো নিউজকে বলেন, মোখায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে উপকূল, নিম্নাঞ্চল এবং পাহাড়ে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা নিশ্চিত হয়েছে। আমরা ক্ষতিরোধে করণীয় সবকিছুই করছি। আতঙ্কিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার অনুরোধ জানাচ্ছি।

সায়ীদ আলমগীর/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।