ভোটে জিতে ইতালিতে মেম্বার, স্বামী বললেন ‘দেশে নাও ফিরতে পারে’
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার দুইমাস পরেই ইতালিতে চলে গেছেন শরীয়তপুরের এক নারী ইউপি মেম্বার। এরপর থেকে স্বামীর সঙ্গে সেখানেই রয়ে গেছেন। তার স্বামী একজন প্রবাসী। ওই ইউপি মেম্বারের নাম মোছা. সম্পা। এতে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নবাসী।
ইউপি মেম্বার সম্পা ইতালি চলে যাওয়ায় তার মেম্বার পদ বাতিল চেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন ওই ওয়ার্ডের ৭৫ জন ভোটার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন সম্পা। তবে বিজয়ী হওয়ার দুইমাস পর চলে যান ইতালি। এরপর থেকে এক বছর দুইমাস ধরে সেখানেই রয়েছেন। এতে ওই ওয়ার্ডের ভোটাররা তাদের সেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
নিয়ম হলো দেশের ভেতরে কোথাও ছুটির প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটির অনুমোদন দেন। তবে বহির্গমনের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে। জেলা অফিস তাকে ছুটি মঞ্জুর না করলে দেশের বাইরে গমন করার সুযোগ নেই।
তবে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইতালি যেতে ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেন ইউপি মেম্বার সম্পা। তবে মন্ত্রণালয় ছুটি মঞ্জুর করেনি। অনুমতি ছাড়াই তিনি ইতালি গেছেন।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বেপারী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ভোট দিয়ে মেম্বার বানিয়ে আজ বড় ভোগান্তিতে পড়েছি। সে দুমাসও দেশে থাকেনি। চলে গেছে ইতালিতে। এখন জন্মনিবন্ধন করাতে হলে আমাদের সই নিতে যেতে হয় মহিলা মেম্বারের কাছে। এ মেম্বারকে বাতিল করে নির্বাচন দিলে আমরা গরিবের বন্ধু ও জনপ্রিয় একজন মেম্বার বানাতে চাই।’
এ বিষয়ে ইতালি প্রবাসী সম্পার স্বামী আজাহার বেপারি ইমোতে জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী অনুমতির জন্য আবেদন করেছে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো কাগজ পায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেম্বার হয়ে কী হবে টাকা না থাকলে। একবার শখ ছিল মেম্বার হয়েছে। আমার স্ত্রী সম্পা দেশে ফিরতেও পারে, নাও পারে।’
নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মাতাব্বর বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করেছিলেন ইউএনও। তদন্ত শেষ হয়েছে। সম্পা আজ ৯ মাস পরিষদের মাসিক সভায় অনুপস্থিত। তিনি ইতালি থাকেন। নিয়মনীতি অনুযায়ী তিনমাস কোনো মেম্বার মাসিক সভায় অনুপস্থিত থাকলে তার সদস্য পদ বাতিল হয়ে যায়। বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ ইউএনও আব্দুলাহ আল মামুন বলেন, নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদ শূন্য ঘোষণা করে পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
এসআর/এএসএম