ঘূর্ণিঝড় মোখা
কক্সবাজারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:২৮ পিএম, ১৩ মে ২০২৩
অতি প্রবল রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের আকাশ মেঘালা হয়ে আছে। শুক্রবার (১৩ মে) দিনগত রাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। সাগর তীর বা খোলা এলাকায় হালকা বাতাস প্রবাহিত হলেও বেশিভাগ জায়গায় গুমট ভাব বিরাজ করছে। ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সবার।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলমান থাকায় উপকূলে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে কেউ বাসাবাড়ি ছাড়ছেন না। অবহেলা না করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষে মাইকিং করছে রেড ক্রিসেন্টের সিপিসি স্বেচ্ছাসেবক দল।
সন্ধ্যার পর থেকে দমকা হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান।
শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকে প্রখর রোদ ছিল। বিকেল তিনটার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। ২০-২৫ মিনিট বৃষ্টিপাতের পর আবারো ঝলমলে রোদ ওঠে। এরপর শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয় হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। শনিবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। মোখা ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে বেশি আঘাত হানতে পারে, এমনটি প্রচারণা চলায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুক্রবার বিকেলের বৃষ্টির পর বন্ধ হয়েছে লবণ উৎপাদন কার্যক্রম।
কক্সবাজার পৌরসভার নাজিরারটেক এলাকার বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ (৪৮) ও জোহুরা খাতুন (৩৫) দম্পতি জানান, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের পরিবার কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল খুদিয়ারটেক ছিলাম। ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সচেতনতা না থাকায় সেই জলোচ্ছ্বাসে পরিবারে ৮ সদস্য পানিতে ভেসে নিখোঁজ হয়। এরপর কক্সবাজার এসে নাজিরারটেক এলাকায় বসতি গড়েছি। এখন মোখার ভয়াবহতা নিয়ে প্রচারণা চলায় আমরা আগে ভাগে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছি।
কক্সবাজার ট্রলার মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় অধিকাংশ মাছধরার ট্রলার ঘাটে ফিরেছে। কেউ কেউ সমুদ্রতীরের বিভিন্ন ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। মোখা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা হওয়ায় এবং এটি কক্সবাজার উপকূল ও টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে আঘাত হানার সম্ভাবনার কথা বলায় সাগরে থাকা ট্রলারে শুক্রবার কল করে তীরে আসতে তাগাদা দিয়েছে বহদ্দাররা। যারা সংকেত সম্পর্কে বুঝছে না তাদেরও সতর্ক করার পাশাপাশি তীরে আনার চেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনুপ বড়ুয়া অপু ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে করণীয় সম্পর্কে আগাম প্রস্তুতি নিতে রেড ক্রিসেন্টের উপকূলীয় এলাকার টিমগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক টিমগুলো।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সাগরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে। বইছে মাঝারি হাওয়া। সৈকতে ঢেউও বাড়ছে। মোখা প্রবলতা ও সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলার ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
সায়ীদ আলমগীর/এসজে/এএসএম