কিশোরকে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন, পরে বিএসএফের দুঃখপ্রকাশ
ফেনীতে এক কিশোরকে (১৫) ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বাউরখুমা গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ উল্লেখ করে বিজিবির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ।
স্থানীয়রা ওই কিশোরকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কিশোরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে ওই কিশোর ছাগল চড়াতে বাড়ির পাশে ভারত সীমান্তবর্তী তালুকপাড়া এলাকায় যায়। এসময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশে ঢুকে ইউনুসকে ধরে নিয়ে যায়। বিএসএফের ৪-৫ জন সদস্য তার হাত-পা বেঁধে লাঠি ও বন্ধুকের বাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। তার ডান হাত ভেঙে দেন। হাত ও পায়ের আঙুল থেঁতলে দেন। পরে মৃত ভেবে ইউনুসকে সীমান্ত এলাকায় ফেলে রেখে চলে যান বিএসএফ সদস্যরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএসএফ সদস্যরা ইউনুসকে চার ঘণ্টা আটকে রেখে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশের অংশে ফেলে রেখে চলে যান। পরে গ্রামের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বিকেলে পৌনে ৫টার দিকে পরশুরাম উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যান।
নির্যাতনের শিকার কিশোরের ভাষ্যমতে, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সীমান্তবর্তী এলাকায় ছাগল চড়াতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাকে ধরে নিয়ে যান। পরে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা না করে ৪-৫ জন তাকে লাঠি ও বন্দুকের বাট দিয়ে পেটাতে থাকেন। পিটিয়ে ডান হাত ভেঙে দেন। একপর্যায়ে শার্ট-প্যান্ট খুলে ফেলে নির্মমভাবে পেটাতে থাকেন। পরে বন্ধুকের বাট দিয়ে দুই হাত ও পায়ের আঙুল থেঁতলে দেন।
এ বিষয়ে বিজিবি ফেনীর অধিনায়ক লে. কর্নেল রকিব হাসান বলেন, ওই কিশোর সীমান্তবর্তী এলাকায় গেলে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে। প্রাথমিকভাবে খোঁজখবর থেকে জানা গেছে, বিএসএফ তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে আজ বুধবার দুপুরে দ্বিপাক্ষিক পতাকা বৈঠক হয়েছে। সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের জন্য বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে।ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এসআর/এএসএম