নকলে বাধা দেওয়ায় শিক্ষকদের ওপর হামলা, খাতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা
কুমিল্লার বরুড়ায় চলমান এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলে বাধা দেওয়ায় এবং কেন্দ্রে কড়াকড়ি পাহারা দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষকদের ওপর হামলা ও স্কুল ভাঙচুর করেছে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ছাত্র-শিক্ষকসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন রাতে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আহতদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে মোহাম্মদ আলী (৩৮), সজিব হোসেন (২১), তাজুল ইসলাম (১৭), উদয় (১৭), ফাহাদ (১৭), মো. ফারুক হোসেনের (২১) নাম জানা গেছে। এদের মধ্যে মো. ফারুক হোসেনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর এসএসসির বাকি পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও নকলমুক্ত করার লক্ষ্যে হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপজেলার শাহেরবানু আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়েছে।
অপরদিকে বরুড়া উপজেলায় মঙ্গলবারের গণিত পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ ১৩ জন বহিষ্কার হয়।
ওসি মো. ফিরোজ হোসেন জানান, হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নকলে বাধা এবং হল রুমে কড়াকড়ি গার্ড দেওয়ার কারণে পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে তারা পরীক্ষার খাতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে বিকেল ৪টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরুড়া হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব মো. মেধাদ উদ্দিন বলেন, নকলমুক্ত সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বহিরাগত কিছু লোকজন পরীক্ষা হলের বাইরে গোলযোগ সৃষ্টি করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন মুস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, পরীক্ষা নকলমুক্ত করার জন্য আইনগত যতো পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে আমরা সব পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও নকলমুক্ত ভাবে সম্পন্ন হোক। এ জন্য আমরা ছাত্র-শিক্ষক সবার সহযোগিতা চাই।
এর আগে বুধবার (৩ মে) হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরীক্ষায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে সাত শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন, বরুড়া উপজেলার গালিমপুর টি সি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল বাসার, মো. নোমান আহমেদ, এগারগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালাম, আবুল বাসার, ধনুয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক খোরশেদা বেগম, রাজামারা আলিম মাদরাসার শিক্ষক জামাল হোসেন এবং রামমোহন তমিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাহিদুর রহমান।
জাহিদ পাটোয়ারী/কেএসআর