টানা চারদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুয়াডাঙ্গায় টানা চারদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। মঙ্গলবারও (৯ মে) ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা দেশের সর্বোচ্চ।
এর আগে গত শনিবার ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সোমবার ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা, সতর্ক করতে মাইকিং
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মৃদু তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা যদি ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, তবে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে তা হয় প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলে তা হয় চরম তাপপ্রবাহ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, গত তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে। আজও ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটা এখনো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আগামী তিন থেকে চারদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দিনের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সাগরের লঘুচাপের কারণেই তাপমাত্রা বেড়েছে। বৃষ্টিপাত হলে তবেই তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আসবে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় টানা ৮ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, জনজীবন দুর্বিষহ
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছরের ১ থেকে ৮ মে পর্যন্ত আটদিন তাপমাত্রা ২৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছিল। ওই আট দিনের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এ বছরের মে মাসের প্রথম ৯ দিন তাপমাত্রা ওঠানামা করেছে ৩১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ মাসের ৯ দিনের গড় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের একটু বেশি।
এছাড়া ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছিল। ওই বছর এপ্রিল মাসের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। এবার এপ্রিল মাসের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড
এদিকে, চৈত্রের দাবদাহের মতো এই বৈশাখের গরমেও অতিষ্ঠ জনজীবন। এখন বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টিতে স্বস্তি ফেরার প্রার্থনা সবার। প্রকৃতি পুড়ছে গ্রীষ্মের তাপদাহে। মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে হাঁপিয়ে উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষ। অসহনীয় গরম আর তাপদাহে বিমর্ষ প্রাণ প্রকৃতি।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে বিপাকে পড়েছেন জেলার কৃষিশ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষ। জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠ থেকে ধান সংগ্রহ ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আমিরপুর গ্রামের কৃষক হেলাল আলী বলেন, ‘কয়দিন ধরে যেরাম গরম, মাঠে টিকা যাচ্ছে না। এরাম চললি সব কাজকাম ছেড়ে বাড়ি বইসে থাকতি হবে।’
হুসাইন মালিক/এমআরআর/এমএস