রায়গঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি নেই ৩৯ মাস
রায়গঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সবশেষ বার্ষিক সম্মেলন হয় ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর। এ সম্মেলনের মাধ্যমে এক বছরের জন্য কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ। ওই কমিটিতে গোলাম হোসেন শোভন সরকার সভাপতি ও জাহাঙ্গীর আলম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তবে শোভন-জাহাঙ্গীরের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি তা বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ। এরপর দীর্ঘ ৩৯ মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন কমিটি হয়নি।
এদিকে, দীর্ঘ সময়েও কমিটি গঠন না করায় নতুন নেতৃত্ব যেমন তৈরি হচ্ছে না, তেমনি এর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। এরই মধ্যে কমিটিতে পদপ্রত্যাশী অনেক ছাত্রনেতা রাজনীতি থেকেই নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। বেশ কয়েকজন সাংসারিক জীবনেও প্রবেশ করেছেন। আর যে কয়েকজন এখনো সক্রিয় আছেন, তারাও বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
সভাপতি পদপ্রত্যাশী চান্দাইকোনা হাজী ওয়াহেদ মরিয়ম অনার্স কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ৩৯ মাস ধরে আমরা অভিভাবকহীন অবস্থায় আছি। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের সক্রিয় এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলার মতো সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে এ কমিটি না থাকায় উপজেলা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক কার্যক্রমে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমরা চাই দ্রুত কমিটি হোক এবং আমাদের প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কার্যক্রম আগের মতো সচল হোক। তাই জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রেখে ত্যাগী আওয়ামী লীগ পরিবার ও যাদের ছাত্রত্ব আছে তাদের নিয়ে অবিলম্বে কমিটি ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।
সাবেক ছাত্রনেতারা বলছেন, এ উপজেলার ছাত্র রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে অনেকেই জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখছেন। রাজপথে বরাবরই সরব এ উপজেলা ছাত্রলীগ। তবে এ ইউনিটের কমিটি গঠনে কেন যেন বরাবরই পিছু হটে জেলা ছাত্রলীগ। গত দুই যুগে মাত্র দুইটি কমিটি পেয়েছে এ উপজেলা ছাত্রলীগ।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী রাসেদ রায়হান জয় জাগো নিউজকে বলেন, এসব নিয়ে কথা বলতে এখন আর ভালো লাগে না। এতদিন রাজনীতি করে কী পেলাম। বয়সও শেষের দিকে। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমরাও তো মানুষ। আমাদের সঙ্গে কেন এ অবিচার।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম মাইকেল জাগো নিউজকে বলেন, জেলা ছাত্রলীগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট রায়গঞ্জ উপজেলা শাখা। দীর্ঘদিন এখানে কমিটি হয় না। এ দ্বায় অবশ্যই জেলা ছাত্রলীগকে নিতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে রায়গঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ একসময় পঙ্গু হয়ে যাবে। সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে আমরা চাই দ্রুতই উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া হোক।
তবে এসব বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে ওই উপজেলায় কমিটি নেই, বিষয়টি আমি ও সভাপতি অবগত হয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি করে তাদের সুসংগঠিত করা হবে।
এম এ মালেক/এমআরআর/জেআইএম