বরিশাল সিটি নির্বাচন

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি এক সড়কের কাজ, জনদুর্ভোগ চরমে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরিশাল
প্রকাশিত: ০৯:০১ পিএম, ০৭ মে ২০২৩

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছরেও বরিশাল নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড় সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন ওই এলাকার হাজারো বাসিন্দাসহ সড়কে চলাচলকারীরা।

শনিবার (৬ মে) নগরীর খালপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, বর্তমান মেয়র নির্বাচিত হওয়ার তিন মাসের মাথায় রাস্তাটি খুঁড়ে রাখা হয়। এরপর দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি রাস্তাটির কাজ।

খালপাড় এলাকার ষাটোর্ধ্ব বাসিন্দা ইউনূস হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, এই একটি রাস্তার কারণে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এই ভোগান্তির সঙ্গে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকাও। কারণ কোনো রিকশা বা অটোরিকশা এই রোডে আসতে চায় না। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে অনুরোধ করে আনতে হয়।

তিনি আরও বলেন, রাস্তাটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য স্থানীয় কমিশনারকে একাধিকবার তাগিদ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। কারণ তিনি সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী নন। ফলে সিটি করপোরেশনের ন্যূনতম সেবাও তিনি এই ওয়ার্ডবাসীকে দিতে পারেননি।

রাস্তাটির বিষয়ে অভিযোগ করে খালপাড়ের আরেক বাসিন্দা সিকদার মো. হারুন বলেন, বর্ষায় রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন পুরো রাস্তা কাদায় ভরে যায়। বেশি বৃষ্টি হলে খাল আর রাস্তা এক হয়ে মিশে যায়। তখন বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন চলাচল করতে হয়েছে এই এলাকার বাসিন্দাদের।

তিনি বলেন, তিন মাস আগে খালের পাড়ে বাঁধ (পাইলিং) দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন আবার বর্ষাকাল চলে এসেছে, শিগগির কাজটি সম্পন্ন না হলে ভোগান্তির আর শেষ থাকবে না।

এদিকে, নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিসিক সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মরোক খোলার পোল থেকে লাকুটিয়া খালে ময়লা-আবর্জনা জমে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এক সময় এ খালে বড় বড় নৌকা, ট্রলার চলাচল করলেও এখন পুরো খালটি অকেজো। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার বাসিন্দারা।

লাকুটিয়া খালপাড়ের বাসিন্দা তাসলিমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, আগে এই খালে কাপড় ধোয়া, গোসল করা, থালা-বাসন ধোয়া থেকে সব ধরনের কাজ করতাম। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে খালটিতে ময়লা-আবর্জনা জমে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এলাকার সবাই মিলে কমিশনারসহ বিভিন্ন মানুষের কাছে বলেও কোনো ব্যবস্থা হয়নি।

১ নম্বর ওয়ার্ডের ডোম বাড়ির একাধিক বাসিন্দা জানান, তারা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছ থেকে ন্যুনতম সেবাও পাননি। ডোম বাড়ির মানোন্নয়ন, রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, মন্দির নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি থাকলেও আদৌ তা বাস্তবায়ন করেননি কোনো মেয়র বা কাউন্সিলর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডোম বাড়ির এক বাসিন্দা জাগো নিউজকে বলেন, কমিশনার তো বটেই স্বয়ং মেয়র নিজে এসে এসব উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

নিজের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করে ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আমির হোসেন বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, ওয়ার্ডবাসীকে শুধু ভালোবাসা ছাড়া কিছুই দিতে পারিনি। মেয়রের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। তাই ওয়ার্ডবাসীকেও কিছু দিতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের হাতে ক্ষমতা শুধু নাগরিক সনদপত্র, জন্ম ও মৃত্যু সনদ দেওয়ার। রাস্তাঘাট, ড্রেন, কালভার্টসহ উন্নয়নমূলক কাজের কিছুই করতে পারিনি। কারণ সিটি করপোরেশন থেকে এসবের কিছুই পাইনি।

তবে এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তিনি অংশগ্রহণ করবেন বলে জানান।

শাওন খান/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।