খুলনার বাজারে লাগামহীন চিনি-পেঁয়াজ-আলুর দাম
সরবরাহে ঘাটতির অজুহাতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খুলনার বাজারগুলোতে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। এবার সে তালিকায় যোগ হয়েছে তেল, চিনি, পেঁয়াজ আর আলু। তেলের দাম একটু স্থিতিশীল থাকলেও অন্য তিন পণ্যের দাম যেন ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে।
খুলনার বড় বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, টুটপাড়া জোড়াকল বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একেক বাজারে ওই তিন পণ্য বিক্রি হচ্ছে একেক দামে। তবে একটু হলেও কমেছে মুরগির দাম। সবজি আর মাছের দাম আছে আগের মতোই।
ঈদের আগে খুলনার বাজারে লাল চিনি ১২০ টাকা আর সাদা চিনি ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেই চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা কেজি।
খুলনার বড় বাজারে চিনির মতোই পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। কয়েক দিন আগে যে পেঁয়াজ ৩৮-৪০ টাকায় পাওয়া গেছে, সেই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি।
চিনির দাম কেন বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাব দিতে চাইছেন না কোনো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তারা শুধু বলছেন, চিনির আমদানি কম হওয়ায় সরবরাহও কমে গেছে।
অন্যদিকে সয়াবিন তেলের দাম ১১ মে থেকে বাড়ার ঘোষণা থাকলেও খুলনার বাজারে ১৮০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে।
বড় বাজারে চিনিসহ মাসের বাজার করতে আসা হায়দার আলী বলেন, প্রতি মাসেই বাজারের জন্য বাজেট বাড়াতে হচ্ছে। গত মাসে যে বাজার করতে পেরেছিলাম ৬ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে এবার সেই পরিমাণ বাজার করতে ৭ হাজার টাকা লেগে গেছে। এ টাকা খরচের অন্য খাত থেকে কমে যাবে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সবকিছুর দাম বাড়ে, কিন্তু আয়ের পরিমাণ বাড়ে না।
ময়লাপোতা এলাকার বাসিন্দা রাসেল হোসেন বলেন, বড় বাজারে এসেছিলেন বেশ কিছু পণ্য কেনার জন্য। কিন্তু প্রায় সবপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক কিছুই কিনতে পারিনি। কেনার তালিকায় তেল, চিনি, পেঁয়াজও ছিল। কিন্তু বাজারে এসেই দেখি এ তিন পণ্যের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০-২০ টাকার বেশি। প্রয়োজনের তাগিদে পরিমাণে কম নিতে হয়েছে।
নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা রানা বলেন, আলুর কেজি ৪০ টাকা, সিম ৬০ টাকা, লাউ ৪০ টাকা (প্রতি পিস), উস্তে ৮০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, কুশি ৫০ টাকা, কচু ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০, লাউ শাক ৫০ টাকা, লাল শাক ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে।
জোড়াকল বাজারের মাছ বিক্রেতা নান্টু, রহিম, গণেশ জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় বাজারে মাছের আমদানি দিন দিন কমে যাচ্ছে। বর্তমানে পাঙ্গাশ মাছের দাম ১৮০-২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২৫০ টাকা, প্রতি কেজি রুই, কাতল ও মৃগেল মাছের দাম ৩০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, পার্শে ৬০০ টাকা, টাকি মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৭০০-৯০০ টাকা, পুঁটি মাছ ৩০০ টাকা, হরিণা চিংড়ি ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সিং মাছ ৭০০ টাকা, ভেটকি ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সামুদ্রিক বিভিন্ন মাছ ১৫০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
রূপসা সন্ধ্যা বাজারের মুরগি বিক্রেতা খোরশেদ হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, আজ সকালে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা, কক ৩১০ টাকা, সোনালী ৩২০ টাকা ও পাকিস্তানী ৩৫০ টাকায়।
আলমগীর হান্নান/এসজে/জেআইএম