লিবিয়ায় বন্দি হবিগঞ্জের যুবক, মুক্তিপণ দিয়ে নিঃস্ব পরিবার

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ১০:৩৫ এএম, ০৭ মে ২০২৩
শিকলে বেঁধে ফারুক মিয়াকে পেটানো হচ্ছে

ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকটাই ম্লান হয়েছে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার যুবক ফারুক মিয়ার (৩২)। লিবিয়ায় দফায় দফায় ‘মাফিয়া’ চক্রের হাতে বন্দি হয়ে মুক্তিপণ দিতে গিয়ে পরিবার হয়েছে নিঃস্ব। তাকে হারানোর ভয়ে দালালদের বিরুদ্ধে বিচার চাইতে পারছেন না স্বজনরা। এ অবস্থায় অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা।

ফারুক উপজেলার পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামের পল্লী চিকিৎসক হাজী ওসমান গণি ফটিকের ছেলে। তিন-চার মাস আগে ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় যান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, স্বপ্নের দেশ ইউরোপে পাড়ি জমাতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক যুবক দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় যায়। অনেকে নৌকাযোগে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পৌঁছেছেন। আবার অনেকে লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার মাফিয়া চক্রের হাতে বন্দি হয়েছেন। নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। দিতে হচ্ছে মুক্তিপণ।

এর একজন ফারুক মিয়া। তাকে একমাস আগে ধরে নিয়ে মুক্তিপণের জন্য শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে চক্রটি। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আগেও একবার তিনি তাদের হাতে বন্দি হয়েছেন। তখন পরিবার ৮ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেন। এবার তার পরিবারের কাছে আরও ১১ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু টাকা দেওয়ার অবস্থা নেই তাদের।

ফারুক মিয়ার বাবা হাজী ওসমান গণি ফটিক বলেন, ঘটনা সত্য। তবে আমি বিস্তারিত বলতে পারছি না। আমি অসুস্থ মানুষ। পরে কথা বলবো। আমার ছোট ছেলে এসে দু-একদিন পর এ বিষয়ে কথা বলবে। এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।

তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ওসমান গণি ফটিকের ছেলে ফারুককে মাসখানেক আগে লিবিয়ায় মাফিয়া চক্র তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। চক্রটি এর আগেও তাকে আটক করে পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ফারুক ৬ লাখ টাকায় লিবিয়ায় যায়। তার সঙ্গে এলাকার আরও অনেকে গিয়েছিল। তারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। কিন্তু তার কপাল খারাপ। সেখানে যাওয়ার পর প্রথমে মাফিয়া চক্রের হাতে আটক হলে পরিবার ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নেয়। এখন আবার আরও ১১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। মেরে ফেলতে পারে এ আশঙ্কায় তারা মামলা করে না। বিচারও চায় না। মূল দালাল ঢাকাসহ দেশের অন্য জায়গার। তাদের কাছেই মুক্তিপণের টাকা দিতে হয়।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ বা মামলা করেনি।

এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।