আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধরের পর ফেলা হলো পুকুরে
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আব্দুস সালামকে (৫২) মারধরের পর পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে রাজৈর উপজেলা পরিষদের ভেতরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আব্দুস সালাম মঙ্গলবার দুপুরে মোটরসাইকেল নিয়ে জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য রাজৈর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে যান।
এ সময় আব্দুস সালামের মোটরসাইকেলটি গতিরোধ করেন রাজৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবুল হাসান পিয়াল। পরে পিয়ালের ভাই আশিকুর রহমান পাভেলসহ ১০-১২ জন মিলে খন্দকার আব্দুস সালামকে মারধর করেন। হাত-পা ধরে তাকে রাজৈর উপজেলা চত্বরের পুকুরে ফেলে দেন। এ সময় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকলটিও পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
আহত অবস্থায় আব্দুস সালামকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মঙ্গলবার বিকেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
নাম না প্রকাশ শর্তে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই পক্ষে বিভক্ত। দুই পক্ষের পৃথক কমিটিও আছে। একটি পক্ষ মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, অন্যটি মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান নিয়ন্ত্রণ করেন। মারধরের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার হচ্ছেন মাদারীপুর আওয়ামী লীগের সভাপতির সমর্থক। তাকে যারা মারধর করেছেন তারা সংসদ সদস্য শাজাহান খানের সমর্থক।
তারা আরও জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আব্দুস সালাম একটি অনুষ্ঠানে রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক পক্ষের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদা হাসান পল্লবীকে নিয়ে সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ফরিদা হাসান পল্লবী বাদী হয়ে খন্দকার আব্দুস সালামসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ তুলে মামলা দেন। এরই জের ধরে ফরিদা হাসান পল্লবীর উপস্থিতিতে তার দুই ছেলে রাজৈর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পিয়াল ও তার ভাই পাভেলসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীরা মিলে আব্দুস সালামকে একা পেয়ে মারধর করেন।
আহত আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার আব্দুস সালাম বলেন, `দুপুরে আমার একটি জমির দলিল হওয়ার কথা ছিল। তাই আমি উপজেলা সাব রেজিস্ট্রারের অফিসে যাই। সেখানে যেতেই পল্লবীর উপস্থিতিতে তার দুই ছেলেসহ অন্যরা মিলে আমাকে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেয়। আমার মোটরসাইকেলও পুকুরে ফেলে দেয়। সঙ্গে থাকা টাকাও নিয়ে যায় তারা। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
রাজৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবুল হাসান পিয়াল জাগো নিউজকে বলেন, ‘খন্দকার আব্দুস সালাম হচ্ছেন একজন সিনিয়র মানুষ। তাকে কেন মারধর করবো। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমি বা আমার পরিবার কেউ জড়িত নয়।’
রাজৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, মারধরের শিকার খন্দকার আব্দুস সালামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসজে/এমএস