ইমামকে চড়-থাপ্পড় ডাক্তারপত্নীর, ভিডিও ভাইরাল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ০১ মে ২০২৩

নোয়াখালীতে শামীমা জাহান নামের এক নারীর হাতে মসজিদের এক ইমাম লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। শামীমা মাইজদী প্রাইম হাসপাতালের মালিক ডা. মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী।

রোববার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাইজদী হাসপাতাল রোডের ইসলাম ফার্মেসিতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী হাফেজ মো. মাহমুদুল হাসান (৩৪) হাসপাতাল রোডের হাজী নুর ইসলাম মসজিদের ইমাম ও লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরগাজী এলাকার হাফেজ আবদুল মতিনের ছেলে।

হাফেজ মাহমুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মসজিদ ঝাড়ু দেওয়ার সময় ধুলা ওড়াকে কেন্দ্র করে প্রাইম হাসপাতালের মালিক ডা. মাহবুবুর রহমান আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাকে বাধা দিলে তিনি আমাকে চড়-থাপ্পড়সহ মারধর করেন। পরে তার হাসপাতালের একদল লোক আমাকে মারতে আসেন। প্রাণভয়ে আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ইসলাম ফার্মেসিতে ডাক্তারের স্ত্রী শামীমা জাহান এসে জানতে চান, আমি কেন ডাক্তারকে গালিগালাজ করেছি। একপর্যায়ে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে তিনি আমাকে মারধর করতে থাকেন। এসময় আশপাশের লোকজন আমাকে উদ্ধার করেন।’

ইসলাম ফার্মেসির মালিক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ডাক্তারপত্নী শামীমা জাহান রাতে দোকানে এসে মাহমুদ হুজুরকে খুঁজতে থাকেন। পরে সামনে পেয়ে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেদম মারতে থাকেন। ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা হতভম্ব হয়ে যাই। পরে ভুক্তভোগী ইমাম বাদী হয়ে সুধারাম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।’

এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছেন শানে সাহাবা খতিব কাউন্সিলের সভাপতি মুফতি শামীম মজুমদার।

সূত্র জানায়, সোমবার (১ মে) দুপুরে সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলামের কক্ষে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ, শানে সাহাবা খতিব কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুফতি শামীম মজুমদার, প্রাইম হাসপাতালের মালিক ডা. মাহবুবুর রহমান, কওমি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছির আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জাগো নিউজকে জানায়, মারধরের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে প্রাইম হাসপাতালের একটি গ্রুপ ভুক্তভোগীসহ তাদের লোকজনকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছেন।

অভিযুক্ত শামীমা জাহান ওসির কক্ষে বসে নিজেকে প্রাইম হাসপাতালের চেয়ারম্যান দাবি করে বলেন, ‘রোববার সকালের ঘটনা আপনারা দেখেননি? রাতের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে আমার অন্যায় হলে ক্ষমা চাইবো। কিন্তু আমি সেটা মনে করি না। তবুও বিবেচনা করবো।’

এএসপি মোর্তাহীন বিল্লাহ বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছি। উভয়পক্ষ আইনগত প্রতিকার না চেয়ে সমঝোতা করে নিয়েছে। তবুও কারও কোনো অভিযোগ থাকলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

শানে সাহাবা খতিব কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুফতি শামীম মজুমদার বলেন, বৈঠকে হামলাকারীরা ভুক্তভোগী ইমামের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আমরাও তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। আশা করি ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।

এসব বিষয়ে ওসির কক্ষে উপস্থিত ডা. মাহবুবুর রহমানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।