যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১:৪৬ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৩
দুই নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ/ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরে এ মিছিল করা হয়। পরে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

এর আগে রাত পৌনে ১০টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট এলাকায় সন্ত্রাসীরা জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আলম নোমান (৩৫) ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমামকে গুলি করে।

এতে আব্দুল্লাহ আল নোমান ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার নেওয়ার পথে রাকিবেরও মৃত্যু হয়। তাদের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন>> লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গুলি করে হত্যা

নিহত নোমান সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি প্রস্তাবিত জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। রাকিব বশিকপুর নন্দীগ্রামের রফিক উল্যার ছেলে।

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গুলি করে হত্যাআব্দুল্লাহ আল নোমান ও রাকিব ইমাম/ছবি: সংগৃহীত

খবর পেয়ে রাতে সদর হাসপাতালে জড়ো হন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি উত্তর তেমুহনী প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে নেতাকর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পলাশ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ আহমেদ পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর প্রমুখ। তারা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাকে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি জানান।

jagonews24

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘আব্দুল্লাহ আল নোমান ও রাকিব ইমাম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। দ্রুত জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’

দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জানান, ঘটনার আগে যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান পোদ্দারবাজারে ছিলেন। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা অন্যদের বিদায় দিয়ে তিনি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাকিব ইমামকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে নাগেরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে নাগেরহাটের কাছাকাছি পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও নোমানের মোবাইল ফোনও নিয়ে যায় তারা।

jagonews24

পরে গুলির শব্দে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে নোমান ও রাকিবকে পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর নোমানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গুরুতর আহত রাকিবকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। তার মরদেহও জেলা সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

নিহত নোমান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের ভাই। মাহফুজুরের অভিযোগ, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী আবুল কাশেম জেহাদী পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। কাশেম আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও হেরেছিল। এরপর থেকে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিল।’

jagonews24

স্থানীয়রা জানান, বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম জেহাদী গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মাহফুজুর রহমান। এতে আবুল কাশেম জেহাদীর ভরাডুবি হয়। ওই নির্বাচন নিয়েই কাশেম ও তার অনুসারীদের সঙ্গে মাহফুজ-নোমান গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পরে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

jagonews24সন্তানদের সঙ্গে নিহত নোমান/ছবি: সংগৃহীত

জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, আমরা এ হত্যার প্রতিবাদ জানাই। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। আমরা গুরুত্বসহকারে কাজ করছি।

কাজল কায়েস/এএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।