কৃষকের ক্ষেতের ধান কেটে দিলো ছাত্রলীগ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিংগাপোতা হাওরে শ্যামপুর এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন (৪৮) কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এবার ২০০ শতক ক্ষেতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। এতে তার প্রায় ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়। নিজের জমানো কিছু টাকা ও ধারদেনা করে ধানচাষ করেন। কিন্তু ক্ষেতের পাকা ধান কাটার শ্রমিক পাচ্ছিলেন না তিনি। খবর পেয়ে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার ধান কেটে দেন।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খানের নেতৃত্বে প্রায় ৪৬ জন নেতাকর্মী ধান কাটেন।
এসময় মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ফয়েজ রহমান প্লাবন, যুগ্ম-সম্পাদক ফয়জুর রহমান, আবু সালেহ, পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক বাদল মিয়া, নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ আল রাকিব উপস্থিত ছিলেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা জানতে পারি কৃষক জসিম উদ্দিন শ্রমিক সংকটের কারণে ক্ষেতের পাকা ধান কাটতে পারছেন না। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগাম বন্যা, শিলাবৃষ্টির কারণে ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। এজন্য আমরা ছাত্রলীগের ৪৬ জন নেতাকর্মী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সারাদিন কাজ করে ২০০ শতাংশ জমির ধান কেটে দিয়েছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনামতো আমরা মানবিক এসব কাজ করে যাচ্ছি।’
কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘একজন শ্রমিককে রোজ (প্রতিদিন) এক হাজার টাকা দিতে হয়। কিন্তু শ্রমিক সংকট ও হাতে টাকা না থাকায় ধান কাটতে পারছিলাম না। বুধবার রাতে শ্যামপুর বাজারে বসে এ নিয়ে কথা বলছিলাম। এসময় একজন কলেজছাত্র ফোন করে উপজেলা ছাত্রলীগকে বিষয়টি জানায়। পরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় ৪০ জনের মতো নেতাকর্মী এসে আমার ক্ষেতের পাকা ধান কেটে দিয়ে যায়। এখন আমি চিন্তা মুক্ত হলাম।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ ক্ষেতের ধান কাটা হয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী তিনদিনের মধ্যে বাকি ধান কাটা শেষ হবে।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। এরমধ্যে হাওরে ৪০ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমি রয়েছে।
এইচ এম কামাল/এসআর/জেআইএম