আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর ধর্ষণ মামলা
টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস-কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী। মামলায় বড় মনির স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গোলাম কিবরিয়া বড়মনি টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল গফুরের ছেলে।
এরআগে বুধবার রাতে ভুক্তভোগী কিশোরী টাঙ্গাইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে।
মামলা সূত্র জানা গেছে, ওই কলেজছাত্রীর বাবা-মা মারা গেছেন। এর ফলে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তার ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এ কারণে কিশোরী টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব ও টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের কাছে সহযোগিতা চায়। এতে বড় মনির তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বাসায় ডেকে নেয়। পরে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। কিশোরী তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মোবাইলে ছবি তুলে রাখে। পরে তুলে রাখা ছবি দেখিয়ে বারবার ওই কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে বড় মনির।
আরও পড়ুন: ৫ বছর ধরে তরুণীকে ধর্ষণ, আওয়ামী লীগ নেতা কারাগারে
এতে বর্তমানে তিনি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেয় বড় মনির। কিশোরী সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনি তার শ্বশুরবাড়ি আদালত পাড়ায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এরপরও কিশোরী বাচ্চা নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় ওই বাসায় তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে তাকে সেখানে আবার ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর বড় মনির স্ত্রী তাকে মারধর করেন। এতে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত ৩টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেন। এরপর থেকে তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হতো। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকার জন্য মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বলেন, এটি ষড়যন্ত্র। টাঙ্গাইল-২ আসনের একজন সংসদ সদস্য প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য একিটি টিভি চ্যানেলর সহযোগিতায় এ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে সোয়াপ টেস্ট পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
আরিফ উর রহমান টগর/আরএইচ/জেআইএম