অফিসের কর্মচারীদের দিয়ে বাচ্চা পালন করাচ্ছেন ইউএনও!
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি কর্মচারীদের দিয়ে বাচ্চা পালন করাচ্ছেন। এসব বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভোলাহাট উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানাজ খাতুন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২ মার্চ ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন উম্মে তাবাসসুম। তখন থেকেই তিনি প্রতি মাসে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় অনুমোদন না নিয়ে সভার রেজুলেশন উঠিয়ে উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিলের টাকা অনিয়ম করে ব্যয় করেন। কখনো সিসি ক্যামেরা মেরামত, কখনো বাসা মেরামত বা ইউপি চেয়ারম্যানদের নাম ব্যবহার করে প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
উপজেলা পরিষদের জন্য বরাদ্দ ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্থে নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণ না করে তার অফিস কক্ষে গোপন সভার মাধ্যমে নিজের ইচ্ছামতো প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এডিপির অর্থ বিভাজনের সুযোগ না থাকলেও তা করেন ইউএনও উম্মে তাবাসসুম।
লিখিত অভিযোগে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানাজ খাতুন আরও উল্লেখ করেন, ইউএনও ১ শতাংশ খাতের অর্থ ইউপি চেয়ারম্যানদের ব্যবহার করে কোটেশনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নিজের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে প্রকল্পের কাজ করান। ভালনারেবল উইমেন বেনিফিটের (ভিডব্লিউবি) উপকারভোগী নির্বাচনে তার অনুগত কিছু কর্মকর্তাকে ব্যবহার করে অর্থের বিনিময়ে অনিয়ম করেছেন। এমনকি ইউএনও উপজেলা পরিষদের কর্মচারীদের দিয়ে তার ব্যক্তিগত বাজার ও তার নিজের বাচ্চা লালন-পালন করাচ্ছেন। কর্মচারীদের আমার অফিসে কাজের জন্য ডাকলে দেখা যায় তারা ইউএনওর বাসায় অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে ভোলাহাট উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানাজ খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিভিন্ন অনিয়মসহ ইউএনওর বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। তিনি আমার কাছেও ঘুস চেয়েছেন। টাকা না দেওয়ায় আমার একটি আবেদন আটকে রেখেছেন ইউএনও।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউএনওর হাবিব ও লাবিব নামের দুই সন্তান রয়েছে। হাবিবের বয়স ছয় ও লাবিবের তিন বছর। এ দুই সন্তানকেই সরকারি কর্মচারীদের দিয়ে লালন-পালন করাচ্ছেন তিনি। এমনকি দুই সন্তানকে কর্মচারীদের কাছে রেখে কিছুদিন আগে ভারতে গিয়েছিলেন তিনি।’
জানতে চাইলে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে কপিটা দেন। পরে অভিযোগের কপি দেওয়া হলে আর কল রিসিভ করেননি এ কর্মকর্তা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) একে এম গালিব খান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোহান মাহমুদ/এসআর/জেআইএম