নতুন ট্রেন পাচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী, আরও দুটির যাত্রাবিরতি
অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিগগির নতুন একটি ট্রেন চালু হতে যাচ্ছে। পাশাপাশি ঢাকা-সিলেট-ঢাকা পথে কালনী এক্সপ্রেস, ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ পথে চলাচলকারী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে। এতে করে ট্রেনে যাত্রী আসন সমস্যা সমাধান হবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নতুন ট্রেন চালু ও দুটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির বিষয়ে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা থেকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বুধবার সংযোগ অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ভূইয়ার (৫ এপ্রিল) স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিভাগীয় কমিশনারের কাছ থেকে পাওয়া গোপনীয় প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রস্তাব অনুমোদনের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর কাছে রেল অত্যন্ত জনপ্রিয় যাতায়াত মাধ্যম। বর্তমান সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে মাত্রাতিরিক্ত যাত্রীর ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। ট্রেনের আসন সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিটি ছড়িয়ে পড়লে যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। পাশাপাশি নতুন ট্রেন ও দুটি ট্রেনের যাত্রাবিরতির অনুমোদন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে সবাই।
মাকসুদুর রহমান নামের এক যুবক ফেসবুকে লিখেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন থেকে প্রচুর যাত্রী ঢাকায় যায়। আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও নতুন ট্রেনের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে বর্তমান জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম উদ্যোগ নেওয়ায় দুটি ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও নতুন ট্রেন পেতে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী।
শেখ সাইফুল ইসলাম নামের একজন ফেসবুকে লেখেন, অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রাবিরতি করতে যাচ্ছে সিলেট থেকে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ও চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন। জেলা প্রশাসকের চিঠির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অনুমোদন করেছেন। শিগগিরই যাত্রা বিরতি এবং টিকিট বিক্রির বিষয়টি কার্যকর হবে।
মো. জসিম নামের আরও একজন ফেসবুকে লিখেন, বিজয় ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতি ও বিদ্যমান ট্রেনসমূহের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। আপনি ছাড়া এটা সম্ভবই হতো না। ধন্যবাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য ফেসবুকে লিখেন, জেলা নাগরিক ফোরামের আন্দোলন সফল হতে যাচ্ছে। আন্তঃনগর ট্রেনের এবং কয়েকটি ট্রেনের স্টপেজের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ধন্যবাদ জেলা প্রশাসক। জেলা নাগরিক ফোরাম দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে আন্দোলন করে আসছিল। জেলা নাগরিক ফোরামের একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক মহোদয় পাঠানোর পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি নতুন ট্রেন এবং দুটি ট্রেনের স্টপেজ অনুমোদন দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ট্রেনের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং যেসব আন্তঃনগর ট্রেন আছে সেগুলোর আসন বাড়ানো। এ স্টেশনে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার যাত্রীর আসনের চাহিদা রয়েছে, কিন্তু এ স্টেশনে মাত্র সাড়ে ৪০০ আসন বরাদ্ধ রয়েছে। নাগরিক সমাজ আমার দৃষ্টিতে বিষয়টি আনার পর আমি পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন পাঠায়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করি। বুধবার এ সংক্রান্ত চিঠি পেলাম, প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিতে সম্মতি দিয়েছেন।
এমআইএইচএস/এএসএম