পেঁয়াজের ফলন কম, সার-ওষুধকে দায়ী করছেন কৃষক
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় পেঁয়াজ তোলায় ব্যস্ত সময় পা করছেন কৃষকরা। তবে পেঁয়াজের ফলন কম হওয়ায় হতাশ তারা। এরওপর বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
তাদের দাবি, এবার বিঘায় ১০-৩৫ মণ পেঁয়াজ ফলন হয়েছে। মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৯০০ টাকায়। নিয়ম মেনেই তারা চাষাবাদ করেছেন। কিন্তু সার ও ওষুধ নিম্নমানের হওয়ায় ফলন ভালো হয়নি। বাজারে দামও কম পাচ্ছেন।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলছেন, রাজবাড়ীতে পেঁয়াজের ফলন হেক্টর প্রতি ১২-১৪ টন উৎপাদনের আশা আছে। বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ ১১০০-১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে নানা কারণে ফলন কম হতে পারে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কীটনাশক ডিলার বা কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পেঁয়াজ আবাদের সমৃদ্ধ জেলা রাজবাড়ী। সারাদেশের প্রায় ১৫-১৬ শতাংশ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় এ জেলায়। জেলার ৫ উপজেলায় কমবেশি পেঁয়াজের আবাদ হলেও বালিয়াকান্দি, পাংশা ও কালুখালীতে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়।
বর্তমানে পেঁয়াজ সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে বাড়িতে নিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষণ করছেন আবার কেউ কেউ সংরক্ষণ না করে বাজারে বিক্রি করছেন।
পেঁয়াজ চাষি ইসমাইল মন্ডল বলেন, এবার ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে যে পরিমাণ খরচ আর বর্তমানে যে দাম পাচ্ছি, তাতে লাভ হবে না। ভালো দাম না পেলে আগামীতে আর চাষাবাদ করবো না।
বিল্লাল, আনোয়ার হোসেন, আমিরুল ইসলাম, ইজারত আলী, শাজাহান, ওয়াজেদ শেখসহ একাধিক পেঁয়াজ চাষি জানান, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করতে ক্ষেত প্রস্তুত থেকে ফলন ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বিঘায় সেখানে ফলন হয়েছে সর্বচ্চো ৩৫ মণ। আবার অনেকের ১০ মণও হয়েছে। এখন প্রতি মণ পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করছেন ৬০০-৯০০ টাকায়। ফলে বিঘায় তাদের ৫-৭ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, সার ও ওষুধের মান খারাপ হওয়ায় ফলন ভালো হয়নি। কিন্তু তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ সার ও ওষুধ ব্যবহার করেছেন। এ অবস্থায় প্রতিমণ পেঁয়াজের দাম ১৫০০-২০০০ টাকা করা হলে কিছুটা লাভ হতে পারে।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, রাজবাড়ী পেঁয়াজ আবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এবছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। নতুন করে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে হেক্টর প্রতি ১২-১৪ টন ফলন পাওয়া যাবে। এ মুহূর্তে ১১০০-১২০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এভাবে বাজার দর থাকলে ও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন হলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
এ কৃষি কর্মকর্তার দাবি, সময় মতো রোপণ না করা, বৈরী আবহাওয়া, মানসম্মত কীটনাশক ও বীজ ব্যবহার না করা, সঠিক পরিচর্যা না করার কারণে ফলন কম হতে পারে। তবে আমি যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও কীটনাশকের মান পরীক্ষা করছি। এরপরও সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে ওই কীটনাশক ডিলার ও কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজে/জেআইএম