‘পত্রিকায় দেখে বৈকালিক চিকিৎসা নিতে এলাম’
বৈকালিক চিকিৎসা সেবা চালু করতে সকাল থেকেই প্রস্তুতি ছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিজ জেলা মানিকগঞ্জে। জেলা সদর হাসপাতালের ৮তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় পাঁচজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে শুরু হয় কার্যক্রম। প্রথম দিন সাতজন এ সেবা নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৩টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বৈকালিক সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে চিকিৎসকরা নিজেদের চেম্বারে বসেন সাড়ে ৩টার পর। ২১২ নম্বর কক্ষে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নীলুফা পারভীনের প্রথম রোগী সাত বছরের শিশু ওয়াজিব ওহী। বাবা রাহাজুদ্দিনের হাত ধরে সে হাসপাতালে এসেছিল। তার সমস্যা ঠাণ্ডা ও জ্বর।
ওহীর বাবা রাহাজুদ্দিন সরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখেছি ৩০ মার্চ থেকে বিকেলে হাসপাতালেই নির্ধারিত ফির বিনিময়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানে যাবে। তাই ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে এনেছি। প্রথম দিন আনুষ্ঠানিকতার জন্য সেবা পেতে আধাঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। তবে ভালো লেগেছে। খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন চিকিৎসক।’
রাহাজুদ্দিন আরও বলেন, ‘ক্লিনিকগুলোতে হয়রানি অনেক। সরকারি হাসপাতালে অন্তত সেটা থাকবে না। চিকিৎসকের ফি অনেক কম। ক্লিনিকগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষাতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও দেওয়া হয়।’
২১৫ নম্বর কক্ষে ডা. জাহাঙ্গীর মো. সারোয়ার, ২১০ নম্বর কক্ষে মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. সাকিনা আনোয়ার, ২১১ নম্বর কক্ষে মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কামরুন্নাহার ও ২১৪ নম্বর কক্ষে সি. কনসালটেন্ট ডা. রুমা আক্তার সেবা দেওয়ার জন্য রোগীর অপেক্ষায় বসে ছিলেন। প্রায় ঘণ্টা খানেক পর তারা একজন দুজন করে রোগীর দেখা পান।
নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রথম দিন মোট সাতজন রোগী বৈকালিক সেবা নিয়েছেন বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রাসেল।
রোগী দেখার পর ডা. নীলুফা পারভীন তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, সরকারের এ উদ্যোগের ফলে বিকেলে মানুষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাচ্ছেন। একই সঙ্গে প্যাথলজিক্যাল সাপোর্টও পাচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় একটা স্ট্যান্ডার্ড মেন্টেন করা হয়। এটা বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ে অবশ্যই ভালো হবে।
তিনি আরও বলেন, রোগী যেহেতু ফি দিয়ে সেবা নিবে তার মানসিক সন্তুষ্টিও দরকার। সেবার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং লোকবল বাড়ানো প্রয়োজন।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীন জাগো নিউজকে বলেন, খুবই অল্প সময়ের নোটিশে কার্যক্রমটি শুরু করতে হয়েছে। এজন্য প্রচারণায় ঘাটতি ছিল। এরপরও চেষ্টা করেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে।
তিনি আরও বলেন, কোন ডাক্তারের কত টাকা ফি সেই নির্দেশনার চিঠিটিও সকালে পেয়েছি। তবে প্রথম দিন যারা চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন, সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সামনের দিনগুলোতে রোগীর ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে।
বি এম খোরশেদ/এসজে/জিকেএস