নাব্য সংকটে পদ্মায় আটকা পড়ছে কার্গো জাহাজ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীতে কাটছেই না নাব্য সংকট। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ চলাচল। নাব্য সংকটের কারণে দৌলতদিয়া ৬নং ফেরি ঘাটের পদ্মা নদীতে আটকা পড়েছে উত্তরাঞ্চলগামী কয়েকটি জরুরি পণ্যবোঝাই কার্গো। ফলে এখান থেকেই খালাস করা হচ্ছে পণ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলের পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ দৌলতদিয়া, নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী নৌপথ। প্রতিদিন এরুট দিয়ে বিভিন্ন পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ চলাচল করে থাকে। কিন্তু চলতি শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ায় নৌপথের বিভিন্ন পয়েন্টে অসংখ্য ডুবোচর জেগে উঠেছে। পাশাপাশি চ্যানেলের পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একটি জাহাজ গন্তব্যে পৌঁছাতে ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে।
এ অবস্থায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে ছেড়ে আসা পাবনার নগরবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বন্দরগামী বিভিন্ন মালামাল, সার, গম, কয়লাবোঝাই কোস্টার জাহাজ ডুবোচরের কারণে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ার ৬নং ফেরিঘাটে নোঙর করে রাখা হচ্ছে। আটকে থাকা কার্গো জাহাজ থেকে ছোট ট্রলার ও বাল্কহেডে পণ্য খালাস করে গন্তব্যে নেওয়া হচ্ছে।
এ সময় দেখা যায়, এমভি আব্দুল কাদের, এমভি শেখ সুরজাত আলী, এমভি ল্যাবস, এমভি গোলাপ-১, রশিদ শিপিং লাইন, এমভি এসটিএস-১, এমভি মোর্শেদা বেগমসহ ৮টিরও বেশি কোস্টার জাহাজ নোঙর করে আছে। জাহাজগুলো থেকে শ্রমিকরা মালামাল লোড-আনলোডের কাজ করছেন।
জাহাজের মাস্টার আব্দুল আলীম বলেন, নদীর বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ডুবোচর জেগে উঠেছে। চট্টগ্রাম থেকে আসতে বিভিন্ন স্থানে আটকে যাচ্ছে জাহাজ। ফলে ঘুরে ঘুরে আসতে হচ্ছে। এতে তাদের খরচ ও সময় বেড়ে যাচ্ছে। পানি কমের কারণে পাড়েও ভেড়াতে পারছেন না। এ অবস্থায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে জাহাজ নোঙর করে ট্রলার ও বাল্কহেডে করে মালামাল খালাস করতে হচ্ছে।
আরেক জাহাজের মাস্টার রশিদ সরদার বলেন, নদীতে পানি থাকলে চট্টগ্রাম থেকে দৌলতদিয়ায় আসতে সময় লাগতো ২ থেকে ৩ দিন। সেখানে সময় লাগছে ৫ থেকে ৭ দিন। এরপর আবার মাঝ পথে দৌলতদিয়ায় এসে মালামাল খালাস করতে হচ্ছে।
ফেরির মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, ড্রেজিংয়ে একটি চ্যানেল সচল আছে। ওই চ্যানেলটি শুধুমাত্র দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়ার সময় ব্যবহার করি। আর পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া যাওয়ার সময় স্বাভাবিক নদীপথই ব্যবহার করা হয়। নদীতে অসংখ্য ডুবোচরে ঝুঁকি থাকলেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে আপাতত কোনো ঝুঁকি নেই।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ম্যানেজার খোরশেদ আলম বলেন, নদীতে নাব্য সংকটের কারণে ফেরিগুলো নদীর ভাটি দিয়ে ঘুরে আসছে। যার কারণে ফেরি চলাচলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগছে। তবে নদীর চ্যানেল ঠিক করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। নদীতে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য ১২ থেকে ১৭ ফিট পানির গভীরতার প্রয়োজন। পানির গভীরতা কম থাকায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় পণ্য খালাস করতে হচ্ছে।
এফএ/এএসএম