জিআই পণ্য হচ্ছে নাটোরের কাঁচাগোল্লা
নাটোরে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি কাঁচাগোল্লা জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক চিহ্ন) পণ্য হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী এ মিষ্টান্নকে নিবন্ধনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির হাতে জিআই পণ্য হিসেবে কাঁচাগোল্লা তালিকাভুক্তির জন্য এফিডেভিটের কপি হস্তান্তর করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, যেহেতু কাঁচাগোল্লার সঙ্গে নাটোরের আবেগ জড়িত। এ কারণে আমার বিদায়ের আগে আমি কাজটি শুরু করেছি। আশা করছি, অল্পদিনের মধ্যে জিআই পণ্য হিসেবে কাঁচাগোল্লা অন্তর্ভুক্ত হবে।
আদি কাঁচাগোল্লার প্রকৃতি পরিবর্তন করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ হবে।
জানা যায়, নাটোরের রানী ভবানী মিষ্টি অনেক পছন্দ করতেন। তার রাজপ্রাসাদে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন লালবাজারের মিষ্টি বিক্রেতা মধুসূদন পাল। একদিন মধুসূদন পালের ২০ কর্মচারীর সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। দোকানে দুই মণ ছানা রাখা ছিল। ছানাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মধুসূদন ছানার ওপর চিনির সিরা দিয়ে ভিজিয়ে দেন। এরপর সেগুলো চেখে দেখেন এর স্বাদ হয়েছে অপূর্ব।
এদিকে, রানী ভবানীর লোকেরা মিষ্টি নিতে আসলে তিনি সিরা দেওয়া ছানাগুলো পাঠিয়ে দেন। রানী ভবানী সেই মিষ্টি খেয়ে অনেক প্রশংসা করেন এবং এর নাম জানতে চান। মধুসূদন পাল তখন কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা। এটিই ছিল নাটোরের কাঁচাগোল্লার ইতিহাস। তবে নাম গোল্লা হলেও এটি দেখতে গোল নয়। ছানা, চিনি ও এলাচ দিয়ে এই কাঁচাগোল্লা তৈরি করা হয়। এ কাঁচা গোল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নাটোরবাসীর আবেগ।
প্রায় ২৫০ বছর আগে কাঁচাগোল্লা তৈরি শুরু হলেও আজও এর সুনাম বজায় রয়েছে। নাটোরের বিয়ে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং অতিথি আপ্যায়নে এই মিষ্টি সরবরাহ করা হয়।
রেজাউল করিম রেজা/এমআরআর/এএসএম