বরগুনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন, ঝুঁকিতে ১০ হাজার মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০৫:৫১ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২৩
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে পড়ছে

বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঁধে বড় আকারের ফাটল ধরেছে।

সোমবার (২৭ মার্চ) রাতে ২০০ মিটার বাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা এলাকার ১০ হাজার মানুষ। বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পায়রা নদীর প্রবল স্রোতে উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে সোমবার রাতে আকস্মিক ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে বাঁধের দুটি অংশের প্রায় ২০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পায়রা সংলগ্ন বাঁধে ফাটল ধরেছে। পায়রার ভাঙনে তেঁতুলবাড়িয়া, সোবাহানপাড়া, অংকুজানপাড়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের ১০ হাজার বাসিন্দা আতঙ্কে আছে।

স্থানীয়রা জানান, ১৬ বছর ধরে পায়রা নদীর ভয়ঙ্কর ভাঙনে তেতুঁলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের হাজার হাজার একর ফসলি জমি এবং ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

নতুন করে বাঁধে ভাঙন শুরু হওয়ায় তিন গ্রামের ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক শুরু হয়েছে। তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের রোজিনা বেগম ও মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘সিডরের ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিকল্পনা মাফিক টেকসই বাঁধ নির্মাণ করেনি। দায়সারা ভাবে বাঁধ নির্মাণ করছে। ১৬ বছরে এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ জোয়ার ভাটার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা নাজমা ও নুরজাহান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর থেকে আমরা বছরে ছয় মাস পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে চলি। আমাদের এ কষ্টের চিত্রগুলো কারো চোখে পড়ে না।’

তালতলী নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ড. মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু জাগো নিউজকে বলেন, সিডরের পর পরিকল্পনা মাফিক টেকসই বাঁধ নির্মাণ না করায় ১৬ বছরে সাগর সংলগ্ন নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুঁলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রামের অন্তত দেড় কিলোমিটার ভূমি সাগর ও নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে পুরো নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন তালতলীর মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, নতুন করে পায়রার ভাঙন শুরু হওয়ায় পুরো নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নবাসী আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা জাগো নিউজকে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পরিদর্শন করে ঝুঁকিতে থাকা বাড়ির নারী শিশু ও বৃদ্ধদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। স্থানীয় সাইক্লোন শেল্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। বাঁধ মেরামত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছি।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুদীপ্ত চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, পায়রা নদী সংলগ্ন ভেঙে যাওয়া বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে রিং বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।’

এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।