ইসলাম ধর্মের পরীক্ষায় হিন্দু ধর্মের প্রশ্নপত্র
টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় ইসলাম ধর্মের পরীক্ষায় হিন্দু ধর্মের প্রশ্নপত্র দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত দাবি করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার নতুন তারিখ দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৩ মার্চ) উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৫ সালে স্থাপিত হয় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এ উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৪০০। এর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী ২০০ জন। ৫০০ টাকা বেতনে বিদ্যালয়ের এসএসসি কোচিং শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, সোমবার (১৩ মার্চ) ছিল তাদের ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার টেস্ট পরীক্ষা। কিন্তু কেন্দ্রে গিয়ে তারা দেখে পরীক্ষায় হিন্দু ধর্মের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানালে পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ। এরপর জানায় পরীক্ষাটি পরে নেওয়া হবে।
কাদের, ইউসুফসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবকের অভিযোগ, সামনেই এসএসসি পরীক্ষা দেবে আমাদের শিক্ষার্থীরা। তাদের ফলাফল ভালো হওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিদ্যালয়ে কোচিং করানো হচ্ছে। প্রতি মাসে কোচিং ফি বাবদ টাকাও নিচ্ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের মান যাচাই করতে বিদ্যালয় থেকে মডেল টেস্ট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার ছিল ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষা। ওই পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখে প্রশ্নপত্র হিন্দু ধর্মের। বিষয়টি জানালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, প্রশ্নগুলো ঢাকা থেকে কিনে এনে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে সমস্যাটি হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, মডেল টেস্টের প্রশ্ন কেন কর্তৃপক্ষ নিজেরা না করে কিনে এনে পরীক্ষা নিচ্ছে। তাহলে কেন বিদ্যালয়ের বেতন এবং পরীক্ষার ফিসহ কোচিংয়ের জন্য টাকা দিচ্ছি আমরা। তাহলে সন্তানদের কি শিক্ষা দিচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ইসলাম ধর্ম পরীক্ষায় হিন্দু ধর্মের প্রশ্নপত্র থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ছানোয়ার হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকার প্রশ্নঘর থেকে ২৫ টাকা দরে প্রতি সেট প্রশ্নপত্র কেনা হয়েছে। অন্য পরীক্ষার প্রশ্ন ঠিক থাকলেও ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার প্রশ্নপত্রে এমন ভুল হয়েছে। ২২ মার্চ পুনরায় নতুন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষাটি নেওয়া হবে। বিষয়টি প্রশ্নঘর মালিক পক্ষকে জানানো হয়েছে।
বাগবাড়ি চৌবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি নায়েব আলী সরকার জাগো নিউজকে বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। পরে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রোকেয়া খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এর বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।
আরিফ উর রহমান টগর/এসজে/এমএস