পুড়ে অঙ্গার ছেলে, জানেন না হাসপাতালে ভর্তি বাবা-মা
ময়মনসিংহের ত্রিশালে মাইক্রোবাস উল্টে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আশিক মিয়া (১৩) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ বাবা-মা এখনও জানেন না তাদের ছেলে আর নেই। তারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত আশিক মিয়া জেলার ধোবাউড়ার বাঘবেড় ইউনিয়নের সালকোডা গ্রামের রুবেল মিয়া ও ফেরদৌসী আক্তার দম্পতির ছেলে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রুবেল মিয়া বলেন, আমি ঢাকার মোহাম্মদপুরে কাজ করি। সম্প্রতি ধোবাউড়ায় নিজ বাড়িতে এসেছিলাম। ঘটনার দিন রাতে ওই মাইক্রোবাসে করে স্ত্রী ফেরদৌসী ও ছেলে আশিককে (১৩) নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলাম। পথিমধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের বাঘবেড় এলাকায় যেতেই পেছন থেকে একটি গাড়ি আমাদের গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি দুই থেকে তিনবার উল্টে নিচে পড়ে যায়। পরে আর আমার কিছুই মনে নেই। আমার স্ত্রী-সন্তান কোথায় আছে বলতে পারি না।
এদিকে একই হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ফেরদৌসী আক্তার। তিনি বলেন, আমার স্বামী-সন্তান কোথায় আছে, আমি জানি না। এনে দেন, আমি তাদের দেখবো।
রোববার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাঙামাটিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আশিক মিয়াসহ চারজন নিহত হন। আহত হন আরও পাঁচজন।
অন্য নিহতরা হলেন জেলার ধোবাউড়ার বাঘবেড় ইউনিয়নের খামার ভাসা গ্রামের দগ্ধ তোতা মিয়ার স্ত্রী রেজিয়া খাতুন (৪৬) ও দগ্ধ আক্কাস মিয়ার স্ত্রী দোলেনা খাতুন। এ সময় আরও এক অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু হয়।
ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সাব-অফিসার আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, মাইক্রোবাস ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পথে ত্রিশাল উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাঙামাটিয়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা লেগে উল্টে খাদে পড়ে যায়। এতে মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান। আহত হন আরও পাঁচজন। পরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও নিহতদের মরদেহ ত্রিশাল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, আহত পাঁচজনকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এফএ/এএসএম