পায়রা বন্দর নিয়ে যে দুর্ভোগে পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলবাসী

আব্দুস সালাম আরিফ আব্দুস সালাম আরিফ , জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ০৫:৪০ পিএম, ১১ মার্চ ২০২৩

পায়রা বন্দরে কন্টেইনার পরিবহন শুরু হলে অসহনীয় যানজটের মুখোমুখি হতে হবে পটুয়াখালী, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের। কুয়াকাটা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কটি দুই লেনের হওয়ায় বাড়তি যানবাহনের চাপ সামাল দিতে গিয়ে এই সড়কে দুর্ঘটনার সম্ভবনাও রয়েছে। এতসব শঙ্কার মধ্যেও সড়ক প্রসস্তকরণে কোনো সুখবর নেই এখনো। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে আপাতত রক্ষণাবেক্ষণের মধ্য দিয়েই যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করা হবে।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পটুয়াখালী, বরিশাল অঞ্চলে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এখন সাড়ে চার থেকে ৫ ঘণ্টায় সড়ক পথে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় পৌঁছানো যায়। আর পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কুয়াকাটা থেকে দেশের এমন কোনো জেলা নেই যেখানে বাস চলাচল করছে না। ফলে প্রতিদিন এই সড়কে শত শত যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে।

পায়রা বন্দর নিয়ে যে দুর্ভোগে পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলবাসী

আরও পড়ুন- বনরক্ষীদের অনিরাপদ জীবন

এমন পরিস্থিতিতে আগামী এপ্রিল কিংবা মে মাসে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পায়রা সমুদ্র বন্দরে পণ্য পরিবহন শুরু হলে এই সড়কে নতুন করে প্রতিদিন সহস্রাধিক ট্রাক চলাচল শুরু করবে। তবে ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত পুরো সড়কটি প্রসস্ত না হওয়ায় এবং দুই লেনের হওয়ায় দুর্ভোগ পৌঁছাবে চরমে।

এছাড়া এই সড়কের পাশে বাজার এবং বিভিন্ন স্থান জনবহুল। ফলে বাড়তি যানবাহন চলাচলের কারণে যেমন ধীরগতির সৃষ্টি হবে তেমনি অসহনীয় যানজটের মুখোমুখি হতে হবে বলেও মনে করেন জেলার ব্যবসায়ী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।

পায়রা বন্দর নিয়ে যে দুর্ভোগে পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলবাসী

পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র ও পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, একটি বন্দরে ব্যবহার উপযোগী সড়ক এখনও নেই। বর্তমানে পটুয়াখালী থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত সড়কের মাঝে কোনো ডিভাইডার নেই। দুটি গাড়ি ক্রস করতেই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন এই সড়কে যদি সহস্রাধিক ট্রাক চলাচল করে তাহলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। এছাড়া এই মহাসড়কের পাশে কোনো সার্ভিস লেন না থাকায় তিন চাকার ধীর গতির যানবাহনগুলো চলচল করে। এতে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে।

আরও পড়ুন- মাতৃভাষা হারাতে বসেছে ওরা

পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়িক নেতা অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান বলেন, পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে পদ্মা সেতু একটি আশির্বাদ। এই সেতু চালু হওয়ার পর এই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবাতাস বইছে। কুয়াকাটা কেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবসায় এখন চাঙ্গাভাব। তবে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিানালে পণ্য ও কন্টেইনার পরিবহন শুরু হলে এই সড়কে যানবাহনের যে চাপ বাড়বে তাতে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হবে। এমন পরিস্থিতিতে ভোগান্তি বাড়বে। এ বিষয়ে এখনই করণীয় নির্ধারণ এবং সে অনুযায়ী কাজ করা দরকার।

পায়রা বন্দর নিয়ে যে দুর্ভোগে পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলবাসী

পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ২০১৬ সালে চালু হওয়ায় পায়রা বন্দরে বর্তমানে বহিঃনোঙ্গরে অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৩শ’ বিদেশি জাহাজ এই বন্দর ব্যবহার করেছে। এবছর বন্দরের প্রথম টার্মিনালে পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হবে। এমন পরিস্থিতিতে সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়বে। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এরইমধ্যে আমরা সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন মহলে চিঠিপত্র দিয়েছি।

আরও পড়ুন- লাল কাঁকড়া আর পরিযায়ী পাখির দ্বীপ ‘চর বিজয়’

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ বলেন, পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৮৪ কিলোমিটার সড়ক প্রসস্ত করার জন্য জরিপ কাজ চলছে। আগামী জুনে জরিপ শেষ হলে শুরু হবে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। এরপর সড়কটির দুই পাশ সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এটি একটি বড় ধরনের প্রকল্প, হয়তো এক্ষেত্রে বিদেশি কোনো ফান্ডের প্রয়োজন হবে।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।