টিসিবির কার্ড জিম্মি করে টাকা নেন ইউপি সদস্য
নেত্রকোনার মদনে টিসিবির কার্ড জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হারেছ মিয়া নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। হারেছ মিয়া তিয়শ্রী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। কার্ড জিম্মি থাকায় পণ্য না পেয়ে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেলে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যান সুবিধাভোগীরা। নিজের লাভের আশায় কার্ডদারীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন ইউপি সদস্য হারেছ মিয়া।
জানা গেছে, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলায় তালিকা তৈরি করে কার্ডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তালিকা তৈরি করে ক্রেতার ফরম পূরণের কাজ শেষ হলে টিসিবি কার্ড সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের। সেই সুযোগে তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারেছ মিয়া সুবিধাভোগীদের কার্ড জিম্মি করে অর্থ আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদে ১ হাজার ৩৮৫ জন নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। সেই সময় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে হারেছ মিয়ার হাতে একাধিক সুবিধাভোগীর কার্ড জিম্মি থাকতে দেখা গেছে।
এ সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বালালী গ্রামের সুবিধাভোগী হাফসা আক্তার বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার ছবি আর আইডি কার্ড হারেছ মিয়ার কাছে দিয়ে এসেছি। এজন্য তাকে টাকাও দিতে হয়েছে। কিন্তু আমার কার্ডটা তার কাছে রেখে দিয়েছে। আজ সকাল থেকে মালামাল নেওয়ার জন্য ঘুরতেছি। বিকেলে দেবে বলে এখন হারেছ মেম্বার কোথায় চলে গেছে।’
পরবর্তীতে সুবিধা পাবেন না এই ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুবিধাভোগী জানান, ‘কার্ড করার জন্য আগেই মেম্বারকে টাকা দিতে হয়েছে। কিন্তু কার্ডগুলো আমাদের হাতে দেয় না। যখন মালামাল কিনতে আসি তখন কার্ডগুলো তার কাছ থেকে নিতে হয়। কোনো কোনো মাসে মালামালও কিনতে পারি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হারেছ মিয়া মুঠোফোনে জানান, ‘তারা (সুবিধাভোগীরা) কার্ড দিয়ে মালামাল নেবে এতেতো আমার কিছু লাভের দরকার আছে। তাই আমার লাভের জন্য ১০০০ টাকা করে নিয়েছি।’
তিয়শ্রী ইউনিয়নের টিসিবির ডিলার শফিকুল ইসলাম (শফি) জানান, ‘যারা কার্ড নিয়ে এসেছে তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। আজ ১ হাজার ৩৮৫ জন সুবিধাভোগীর মাঝে পণ্য বিক্রি করেছি। হারেছ মেম্বার কার্ড ছাড়া পণ্য নিতে এসেছিলেন কিন্তু তাকে পণ্য দেওয়া হয়নি।’
তিয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান জানান, ‘হারেছ মেম্বার কার্ড জিম্মি করে টাকা আদায় করছে কি না বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। এমন করে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও টিসিবির পণ্য বিক্রি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তানজিনা শাহরীন জানান, ‘একটি নতুন কার্ড তৈরি করার জন্য ৫০-১০০ টাকা খরচ হতে পারে। তবে কার্ড জিম্মি করে টাকা আদায় করার সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এইচ এম কামাল/এফএ/এমএস