জলাধার খনন ঘিরে পাউবো-গ্রামবাসী সংঘর্ষ, আহত ২০
নীলফামারীর ডিমলায় বুড়িতিস্তা সেচ প্রকল্পের জলাধার খনন কাজ ঘিরে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বুড়িতিস্তা ব্যারেজ এলাকায় কুঠিরডাঙ্গা গ্রামে খনন কাজের সময় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও এতে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলার কয়েক একর কৃষি জমিতে জলাধার খনন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসীর সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরোধ চলছিল। এরই জেরে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খনন কাজে বাধা দেয় গ্রামবাসী। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এতে পাউবো কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আট জনসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ডোমার হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এজাজুল ইসলাম বলেন, খননকাজে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু কোনো প্রকার আলোচনা করা হয়নি। ফসলের ক্ষতিপূরণ ও জমি অধিগ্রহণও করা হয়নি। আর কয়েকদিন পরই ভুট্টা কাটা হবে। সেই ভুট্টাক্ষেতসহ বোরো ধান, আলু ও বাদাম ক্ষেতের ওপর দিয়েই খননকাজ শুরু হয়েছে। তাই এলাকাবাসী বাধা দিয়েছে।
জলঢাকা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন, জলঢাকা ও ডিমলা মিলিয়ে দুই উপজেলার কয়েকশ কৃষকের আবাদি জমি, বসতবাড়ি, মসজিদ, স্কুল ও গাছপালা রয়েছে। গ্রামবাসী দীর্ঘদিন ধরে এসব জমিতে চাষাবাদ ও বসবাস করছে। ফসলি জমিতে খাল খনন শুরু করার আগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম আছে। এ প্রকল্পে কোনো কিছু না মেনেই ঠিকাদার খাল খনন শুরু করেছে। এতে কৃষকদের উঠতি ফসল নষ্ট হওয়ায় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে নীলফামারী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল সরকার বলেন, যারা সরকারি সম্পত্তি দখল করে আছেন, তারাই বাধা সৃষ্টি করে হামলা চালায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লাইছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর বুড়িতিস্তা নদীতে জলাধার খনন কাজের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী ও পাউবোর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে ছয় শতাধিক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
রাজু আহম্মেদ/এমআরআর/এমএস