শহীদ মিনার এখন ময়লার ভাগাড়!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৮:১৭ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে যে শহীদ মিনার এক সময় তৈরি করা হয়েছিল এখন তা ময়লার ভাগাড়! মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষেও তা পরিষ্কার করা হয়নি। দেওয়া হয়নি কোনো ফুল।

১৯৯৩ সালে নেত্রকোনার বারহাট্টায় কাকুরা বাজারে স্থাপন করা হয় এই শহীদ মিনার। তিন বছর পরই সেটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে শহীদ মিনারের পাশে স্থাপনা গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলা শুরু হয় ওই শহীদ মিনারে। ফলে এটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন- গাইবান্ধায় ৬৬ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে কাকুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুইপাশে দোকানের গলিতে থাকা পরিত্যক্ত শহীদ মিনারে রয়েছে ময়লা আবর্জনার স্তূপ।

ওই বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাকুরা বাজারের চলন্তিকা ক্লাবের উদ্যোগে ১৯৯৩ সালে এই শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। শুরুতে বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা এটিতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন। তিন বছর পর এটি গুরুত্ব হারায়। পরে শহীদ মিনারের দু’পাশ ঘেঁষে মাছের আড়তঘর তৈরি হয়। ছোট গলিতে পড়ে থাকে শহীদ মিনার। তখন থেকে বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।

আরও পড়ুন- নজর কেড়েছে ফুলবাড়ীর শহীদ মিনার

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল বাশার কামাল জানান, দুইপাশে মাছের দোকানঘর তৈরি হওয়ায় শহীদ মিনারটি মানুষের চোখের আড়ালে চলে যায়। আর এখানেই মানুষ ময়লা আবর্জনা ফেলতে থাকে। এটি একটি শ্রদ্ধার জায়গা। এখানে এভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলা ঠিক না। আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছি। দ্রুত শহীদ মিনারটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

বাজারের ব্যবসায়ী ও পাগলী গ্রামের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। শহীদ মিনারে এভাবে ময়লা আবর্জনার স্তূপ থাকা শহীদদের অমর্যাদার সামিল। শহীদ মিনারটি সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার জন্য অনেকদিন থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছি। কিন্তু কিছুই করা হচ্ছে না।

আরও পড়ুন- বরগুনায় রাতের আঁধারে শহীদ মিনার ভেঙে দিলো দুর্বৃত্তরা

সিংধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসিম তালুকদার বলেন, স্থানীয় লোকজনসহ বাজার কমিটির লোকজন এ বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমি একা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। শহীদ মিনারটিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করবো। পাশের কোথাও খোলা জায়গায় এটি সরিয়ে নিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হলে স্থানীয়রা এতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, এটি সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র স্থাপনের বিষয়ে বাজার কমিটির লোকজন আমাকে জানিয়েছিল অনেকদিন আগে। পরে কী হয়েছে আর জানা নেই। এখন জানলাম এটি সরানো হয়নি। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে শহীদ মিনার সরানোর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।