সিরাজগঞ্জ

এখনো শহীদ মিনার পায়নি ৪৭১ বিদ্যালয়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:২১ এএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
শহীদ মিনার নেই এ বিদ্যালয়ে

শহীদ মিনার মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গের প্রতীক। মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠাতার সাহসী চেতনা। যেই শহীদ মিনার দেখলে বিনম্র শ্রদ্ধায় মন জাগ্রত হয় রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারদের মতো ভাষাপ্রেমীর রক্তমাখা দরদ, মমত্ব আর ভালোবাসার দিকে।

গৌরবময় সেই ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পার হলেও সিরাজগঞ্জের ৪৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই স্থায়ী শহীদ মিনার। এ কারণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কলা গাছ, বাঁশ, কাঠ, আর কাগজ-কাপড়ে তৈরি করা অস্থায়ী শহীদ মিনারেই শ্রদ্ধা জানাতে হয় শিক্ষার্থীদের। কিংবা দূরের কোনো শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানায় তারা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মন্ডল জাগো নিউজকে জানান, জেলায় ১ হাজার ৬৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৭১টিতে শহীদ মিনার নেই। তবে দুয়েক বছরের মধ্যেই এসব বিদ্যালয়গুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ হবে।

এ পরিসংখ্যান সরকারি বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে হলেও জেলার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর বেশির ভাগই শহীদ মিনারহীন।

রায়গঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবিনা খাতুন জানায়, আমাদের স্কুলে গত বছর কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়েছিলাম। এবার স্কুলে নতুন ভবন হচ্ছে তাই খালি জায়গা নেই। এ জন্য এবার কলাগাছ দিয়েও শহিদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবো না।

একই কথা জানায় জেলার সদর উপজেলার ধীতপুর আলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেলকুচি উপজেলার তামাইযুক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তামাই বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তামাই খন্দকার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তামাই আবু জাফর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এদের অনেকেই কয়েক কিলোমিটার হেঁটে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।

তামাইযুক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ জাগো নিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে তামাই গ্রামে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার মতো কোনো শহীদ মিনার নেই। বাধ্য হয়ে তামাই পশ্চিম পাড়ায় শহীদ লেবু গাজীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় এ গ্রামের মানুষ।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, শিশুদের সামনে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরতে শহীদ মিনারই প্রথম সিঁড়ি। শুধু তাই নয়, বায়ান্ন থেকে একাত্তরের আন্দোলন সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস জানানোর ক্ষেত্রে শহীদ মিনার একটা গুরুত্বপূর্ণ চেতনার বাহক।

ওই কলেজের বাংলা বিভাগের ছাত্র আহসান হাবীব জাগো নিউজকে বলেন, শুধু প্রাথমিকে নয়, দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা দরকার। আজকের প্রজন্মই যেহেতু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, সে হিসেবে এদেশের ইতিহাস জানাতে শহীদ মিনারের প্রয়োজন আছে।

এম এ মালেক/এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।