ভোটাধিকার নিয়ে শঙ্কিত বিলুপ্ত ছিটবাসী


প্রকাশিত: ০৪:১০ এএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

লালমনিরহাটের ৫৯টি বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দা বাংলাদেশি হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও এখন পর্যন্ত তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চনে এসব জনগণের ভোটাধিকারের বিষয়টি প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের দ্রুত ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করার দাবি উঠেছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নসমূহের নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন করেছেন জেলার হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা।

পাটগ্রাম উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,  লালমনিরহাট জেলার ৫৯টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে পাটগ্রামে অবস্থান ৫৫টির। এর মধ্যে ১৯টিতে কোনো জনবসতি নেই। বাকি ৩৭টিতে লোকসংখ্যা প্রায় ৯ হাজার ৬৪৫ জন। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এসব বিলুপ্ত ছিটমহল। অন্যদিকে হাতীবান্ধার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে একটিতে পড়েছে দুটি বিলুপ্ত ছিটমহল। আর অবশিষ্ট ২টি ছিটমহল লালমনিরহাট সদর উপজেলায় রয়েছে।

আগামী ৩১ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণের তফসিল ঘোষণা করে নিবার্চন কমিশন। ফলে সর্বত্র নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করলেও ভোটাধিকার নিয়ে শঙ্কায় বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী।   

Shitmohol

জানা গেছে, পাটগ্রাম উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মূল খণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সবকটি ছিটমহল। উপজেলার মানচিত্রে যুক্ত হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরাও নিয়মিত আনাগোনা করছে সেখানে। ফলে ছিটমহলের বাসিন্দাদের মাঝে স্বাভাবিকভাবেই ভোটাধিকার প্রয়োগে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কিন্তু গত বছর ৩১ জুলাই থেকে তারা বাংলাদেশি হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও এখন পর্যন্ত ছিটমহলের অধিবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে জানা গেছে। তাই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে বিপুল জনসংখ্যার এসব বাসিন্দাদের মনে।
 
এদিকে নতুন করে ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্তসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলোর ভোটগ্রহণ পিছিয়ে দেয়ার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয়ে আবেদন করেছেন তারা।
 
বাঁশকাটা ছিটমহলের বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, ‘৬৮ বছর পর হলেও আমরা তো বাংলাদেশি হয়ে গেছি। এখন আমাদের ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি বেছে নিয়ে উন্নয়নের পাশাপাশি সেবা নিতে হবে’। তাই জরুরি ভিত্তিতে ভোটাধিকার প্রয়োগসহ জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার দাবি জানান তিনি।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর কুতুবুল আলম ভোটাধিকার নিয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর আবেদন পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা নিবার্চন কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, ‘এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নির্দেশনা চেয়ে পত্র দেয়া হয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যে নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করছি’।

রবিউল হাসান/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।