শাশুড়ি-জা’র গরম রডের ছ্যাঁকায় হাসপাতালে গৃহবধূ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০৬:০৬ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
নারীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফসকা পড়ে আছে

বরগুনার তালতলী উপজেলায় এক গৃহবধূকে ঘরে আটকে রেখে মারধরের পর গরম রডের ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি, জা, ভাসুর ও ননদের বিরুদ্ধে। দুদিন ধরে ভুক্তভোগী নারী আমতলী হাসপাতালে ভর্তি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ জুলাই গৃহবধূর ভাতিজাকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে জা রাজিয়া বেগম তিন লাখ টাকা আনেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর তারা গৃহবধূর ভাতিজাকে বিদেশ না পাঠিয়ে ঘুরাতে থাকেন। টাকা ফেরত না দিতে গৃহবধূ ও তার স্বামী বাবুল হাওলাদরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন তারা। এমনকি ছেলেদের পরামর্শে বাবুলের বিরুদ্ধে মা আদালতে ঘর চুরির মামলা করেন। মামলায় বাবুলকে বৃহস্পতিবার জেলহাজতে পাঠানো হয়।

শুক্রবার দিনগত রাতে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লালুপাড়া এলাকায় গৃহবধূর শাশুড়ি সেতারা বেগম, ননদ জেসমিন বেগম, জা রাজিয়া বেগম ও ভাসুর আবুল হোসেন প্রথমে গৃহবধূকে ঘরে আটকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে চুলায় রড গরম করে গৃহবধূর ডান গালে, পিঠে, দুই হাতে ও বাম পায়ে ছ্যাঁকা দিয়ে গুরুতর জখম করেন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোসকা পড়ে।

স্থানীয়দের খবরে রাত ১১টায় গৃহবধূর ভাই বোনকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। শনিবার সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে আমতলী হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।

আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ বলেন, ‘ভাইর টাকা ফেরত না দিতে আমার স্বামীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাকে নির্যাতন করে এ অবস্থা করেছে। প্রশাসনের কাছে নির্যাতনকারী সবার বিচার চাই।’

তবে সেতারা বেগম, রাজিয়া বেগমের পক্ষে গৃহবধূর ভাসুর আনোয়ার হোসেন হাওলাদার মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের হয়রানি করতে এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে। এছাড়া ওই নারীকে আমরা মারধর করিনি। আমাদের কাছে কোনো টাকা-পয়সা পাবে না।’

আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. লুনা বিনতে হক জাগো নিউজকে বলেন, আমতলীতে কোনো বার্ন ইউনিট নেই। আহত অবস্থায় ওই নারীকে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে এলে, তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি বরিশালে যাননি। এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ বিষয়ে আমতলী হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুমন খন্দকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। আমাদের হাসপাতালের একটি গ্রুপ ওই নারীর বিষয়টি দেখছে। যেহেতু আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা আমতলীতে নেই এ জন্য তাকে বরিশালে যেতে বলা হয়। তবে তিনি যাননি। এ অবস্থায় তাকে চিকিৎসা দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এসজে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।