পুলিশ পরিচয়ে ৩০ নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে প্রতারণা
সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পরিচয়ে অসংখ্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা প্রতারক রুবেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তিনি। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রুবেল রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার আসকরপুর-সারদাহ গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।
পুলিশ পরিচয়ে কলেজছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, ভিডিও ধারণ ও ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ঘটনার শিকার কলেজছাত্রীর বাবা কোতোয়ালি মডেল থানায় ওই মামলা করেন। শুক্রবার সকালে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া বেলেরমাঠ গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, যশোর পৌর শহরের একটি হোস্টেলে থাকেন ওই কলেজছাত্রী। হোস্টেল থেকে কোচিং সেন্টারে যাওয়া-আসার পথে রুবেল হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। রুবেল নিজেকে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বলে পরিচয় দেন। এরপর মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
২০২১ সালের ৩ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে কামরুন নাহার নামের এক নারীর ভাড়া বাসায় যান রুবেল। সেখানে কামরুন নাহারের সহযোগিতায় তাকে শারীরিক সম্পর্ক করেন রুবেল। ওই সময় নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন রুবেল। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটির সঙ্গে অব্যাহতভাবে শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিলেন রুবেল।
২০২২ সালের জুন মাসে মেয়েটি বাড়িতে চলে যায়। এরপরও রুবেল তাকে যশোরে এসে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য চাপ দেন। রাজি না হওয়ায় ওই ভিডিও মেয়েটির বাবার মোবাইলে পাঠান। তার কাছে ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন রুবেল। চার কিস্তিতে রুবেলকে তিন লাখ টাকা দিলেও আর ৫ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। কলেজছাত্রীর বাবা পিবিআইকে জানালে তদন্ত করের ঘটনার সত্যতা পায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজোয়ান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, রুবেল এর আগে ৩০টি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে তাদের টাকাসহ সর্বস্ব লুটে নিয়েছেন। শুক্রবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল স্বীকার করেছেন নিজেকে পুলিশ সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওই মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। তাকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ ও ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এছাড়া ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়েছেন রুবেল। তিনি শুক্রবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
মিলন রহমান/এসজে/এমএস